সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

দাশেরকান্দি প্লান্টে প্রতিদিন ২৫ শতাংশ পয়োবর্জ্য শোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে প্রতিদিন ২ হাজার মিলিয়ন লিটার বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন লিটার অর্থাৎ ২৫ শতাংশ পয়োবর্জ্য শোধন করতে পারছে দাশেরকান্দি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। এতে শীতলক্ষ্যা নদীসহ কয়েকটি নদীর দূষণ কমেছে বলে জানান ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তারা। তারা বলেন, পানিতে দুর্গন্ধ ও ক্ষতিকর উপাদান কমতে থাকায় ফিরছে পরিবেশের ভারসাম্য। একই সঙ্গে বাড়ছে জীববৈচিত্র্য।

গতকাল দাশেরকান্দি প্লান্ট পরিদর্শনে যান ওয়াসার কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তারা এসব কথা বলেন। এ সময় চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ এর-ভাইস প্রেসিডেন্ট ঝাং শিয়ালং, ঢাকা ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মস্তাফিজুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও ডিএসটিপির সাবেক প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. মহসিন আলী মিয়া, উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. মোমতাজুর রহমান, প্রকল্প ব্যবস্থাপক রেন রউকিসহ ঢাকা ওয়াসা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাইড্রো চায়না করপোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা ওয়াসার মাস্টারপ্ল্যান অনুয়ায়ী নারায়ণগঞ্জের পাগলা, ঢাকার রায়ের বাজার, মিরপুর ও উত্তরায় আরও চারটি আধুনিক পয়োশোধনাগার ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এগুলো নির্মিত হলে নদীর দূষণ অনেক কমে যাবে। ফলে নদীর পানি পরিশোধন করে আরও বেশি বিশুদ্ধ পানি সরবারহ করা সম্ভব হবে।

ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধানে হাইড্রো চায়না করপোরেশন দাশেরকান্দি স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ডিএসিটপি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই ডিএসটিপির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চীনা টেকনিক্যাল টিমের সহযোগিতায় ঢাকা ওয়াসা বর্তমানে এসটিপি অপারেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ঢাকা ওয়াসা কর্মকর্তারা জানান, দাশেরকান্দি এসটিপিতে রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা, মহাখালী, ডিওএইচএস, তেজগাঁও, নিকেতন, বাড্ডা, রমনা, ইস্কাটন, নয়াটোলা, মগবাজার, ওয়্যারলেস, মৌচাক, আউটার সার্কুলার রোড, মহানগর প্রজেক্ট, হাতিরঝিল, কলাবাগান ও ধানমন্ডি (আংশিক) এলাকা থেকে আসা পয়োপ্রক্রিয়াকরণ করে পরিশোধিত পানি গজারিয়া খালের মাধ্যমে বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে। উপপ্রকল্প পরিচালক মো. মোমতাজুর রহমান বলেন, পয়োপরিশোধনের ফলে নদীতে দূষণ যেমন কমতে শুরু করেছে। তেমনি আমরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হচ্ছি। যেমন- সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার ফেজ-১ ও ফেজ-২ এর ইনটেক পয়েন্টে শীতলক্ষ্যা নদীর পানির দূষণ কমেছে।

ফলে পানি পরিশোধনে ৬০ শতাংশ কেমিক্যাল খরচ কম হচ্ছে। তিনি বলেন, গজারিয়া খালে, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীতে আগে যে দুর্গন্ধ ছিল এখন তা অনেক কমেছে। ডিএসটিপির সাবেক প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. মহসিন আলী মিয়া বলেন, এসব খাল-নদীতে এখন আমরা মাছ ধরতে দেখি। যা আগে দেখা যায়নি। এর কারণ হলো আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি পানিতে অ্যামোনিয়ার মাত্রা অনেক কমেছে। অ্যামোনিয়া হলো এমন একটি ক্ষতিকারক উপাদান যা জীববৈচিত্র্য নষ্ট করে।

সর্বশেষ খবর