শনিবার, ৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

চালু হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়ে

চট্টগ্রাম - চলছে রোড মার্কিং, সেফটি পার্কিং, গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিডব্রেকার, বাঁক মার্কিং, বৈদ্যুতিক সংযোগ লাইন স্থাপন এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চালু হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়ে

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে টোল প্লাজা। চারলেনের উভয় পাশের কাজও প্রায় শেষ। এখন চলছে রোড মার্কিং, সেফটি পার্কিং, গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিডব্রেকার, বাঁক মার্কিং, বৈদ্যুতিক সংযোগ লাইন স্থাপন এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। প্রতিনিয়তই চলছে চট্টগ্রামের প্রথম ‘এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণের কাজ। চলতি মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রাথমিকভাবে চালু করার প্রস্তুতি নিয়ে চলছে কাজ। বর্তমানে লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সরাসরি এবং পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস মোড়ে সরাসরি নামার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শেষ হচ্ছে পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য অপেক্ষার প্রহর। গত ১৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়েটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ওইদিন পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য যানবাহন চলাচল করে। নির্মাণকাজ অসমাপ্ত থাকায় তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে আগামী জুন পর্যন্ত।

প্রকল্পের পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন,  চলতি মাসের শেষে পতেঙ্গা থেকে উঠে টাইগারপাস নেমে যাওয়া এবং আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার হয়ে পতেঙ্গায় গিয়ে নামার পথটি খুলে দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে চালু করা হবে। এ জন্য পতেঙ্গা অংশে অস্থায়ী টোল প্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পের অধীন ১৫টি র‌্যাম্প আগামী বছরের জনের মধ্যে নির্মাণ করা হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরের ওয়াসা মোড়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগের কাজ প্রায় শেষ। এর মাধ্যমে বহদ্দারহাট থেকে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে কেউ উঠলে তিনি সহজেই ওয়াসা মোড়ে মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পয়েন্টে চলে যেতে পারবেন। সবগুলো র‌্যাম্পের মুখে বসানো হবে টোল প্লাজা। গাড়ি ওঠানামায় দিতে হবে টোল। তবে টোলপ্লাজার নিমাণকাজ শেষ হতে আরও প্রায় এক বছর সময় লাগবে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সিডিএ ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকায় পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। এক্সপ্রেসওয়েটি পতেঙ্গা থেকে শুরু হয়ে লালখান বাজারে শেষ হয়। পুরো এক্সপ্রেসওয়ের ৯টি এলাকায় গাড়ি ওঠানামার জন্য ১৫টি র‌্যাম্প রাখা হয়েছে। এর মধ্যে জিইসি মোড়ে দুটি, টাইগারপাস মোড়ে দুটি, আগ্রাবাদ মোড়ে দুটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেড মোড়ে দুটি এবং কেইপিজেড মোড়ে দুটি। প্রতিটি র‌্যাম্প হবে দুই লেনের এবং একমুখী। চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মিত হয়েছে ৩৮৯টি পিলার, বসানো হয়েছে ৩৮৯টি গার্ডার। জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা থেকে কালুরঘাট। দুই লেনের সড়কটির নিত্যসঙ্গী যানজট। বিশেষ করে দুই নং গেট, জিইসি মোড়, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ মোড়, ইপিডেজ মোড়, বন্দরটিলাসহ নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্টে গাড়ি স্থির হয়েই দাঁড়িয়ে থাকে। এক ঘণ্টার সড়ক চলাচলে সময় লেগে যায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। যানজটে পড়ে বিমান মিস করার ঘটনাও কম নয়। দুর্ভোগে পড়তে হয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। গণপরিবহনের যাত্রীদের ভোগান্তিও দীর্ঘদিনের। এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হওয়ায় এ  সমস্যা নিরসন হবে। পণ্যবাহী ও দূরপাল্লার যানবাহনগুলো এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করলে মূল সড়কে যানজট অনেকাংশে কমে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর