সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

জোটের ফাঁদে দল দখলের অভিযোগ

থানায় ডায়েরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও সামাজিক ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচনি জোট গঠন করে নেতৃত্ব জটিলতায় পড়েছে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট)। অনিবন্ধিত দলগুলোর নেতারা দলটি দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে বলেও জানা গেছে। এদিকে দল দখল চেষ্টার অভিযোগে মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য শরীফ মো. বেদুইন হায়দার গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

সাধারণ ডায়েরিতে জাতীয় লীগের সভাপতি ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, সোনার বাংলা আন্দোলনের সমন্বয়ক কাশেম মাসুদ, গণকংগ্রেসের চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন, ডেমোক্রেটিক লীগের সভাপতি এ আর খান, জাতীয় জনমুক্তি পার্টির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মজুমদারসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে দল দখলের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। সাধারণ ডায়েরিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, যার নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন নম্বর ৪১ ও প্রতীক ‘ছড়ি’। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মুক্তিজোটকে কেন্দ্র করে কয়েকটি অনিবন্ধিত দল ও সামাজিক ব্যক্তিদের নিয়ে ‘গণমুক্তি জোট’ নামে একটি নির্বাচনি জোট গঠন করা হয়। নির্বাচনে ছড়ি প্রতীকে ৬৩ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর জোটের কার্যক্রমও শেষ হয়ে যায়। তবে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নিজেদের জোটের কেন্দ্রীয় নেতা দাবি করে বিভিন্ন সভা করে এবং ‘মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা চলছে’ শিরোনাম দিয়ে  সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি প্রকাশ করে। এর মধ্যে জাতীয় লীগের সভাপতি ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ নিজেকে মুক্তিজোটের সংগঠনপ্রধান দাবি করে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণায় লিপ্ত হন। এদিকে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৩ সালে ৪১ নম্বর দল হিসেবে নিবন্ধিত বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সংগঠনপ্রধান হিসেবে আবু লায়েস মুন্না ও পরিচালনা বোর্ডপ্রধান হিসেবে মো. শাহজালাল আমিরুলের নাম ও ছবি রয়েছে। অন্যদিকে গত ৩১ মার্চ ড. শাহরিয়ার ইফতেখার নিজেকে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সংগঠনপ্রধান পরিচয় দিয়ে নির্বাচন কমিশনে ২০ জনের নতুন কমিটি জমা দেন। সেই কমিটির কোথাও নেই বর্তমান সংগঠনপ্রধানের নাম। এর ভিত্তিতে ড. শাহরিয়ার ইফতেখারের ‘প্রতারণার’ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে গত ২১ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন মুক্তিজোটের সংগঠনপ্রধান আবু লায়েস মুন্না ও পরিচালনা বোর্ডপ্রধান মো. শাহজামাল আমিরুল। বিষয়টি জানতে মুক্তিজোটের সংগঠনপ্রধান আবু লায়েস মুন্নাকে ফোন করলে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন ‘গণমুক্তি জোট’ ছিল নিছক একটা নির্বাচনকালীন জোট। নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটার কার্যক্রমও শেষ। অথচ জোটভুক্ত দলের নেতারা এখন আমার দলের নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন। একটি দলের নেতা হতে গেলে সেই দলের কিছু সাংগঠনিক ধাপ পার হতে হয়। গত ১৯ এপ্রিল ‘মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা চলছে’ শিরোনামে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা যাদের ছবি প্রকাশ করেছেন, তারা মুক্তিজোটের কেউ নন। এটা মুক্তিজোটের সঙ্গে চরম প্রতারণা। এ ব্যাপারে জাতীয় লীগের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার ফুয়াদকে ফোন করলে তিনি বলেন, এমনিতে তো কেউ নিজেকে একটা দলের সংগঠনপ্রধান দাবি করতে পারে না। আমরা কাউন্সিল করে নির্বাচন কমিশনে নতুন কমিটি জমা দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। গত বছর আমাকে মুক্তিজোটের সংগঠনপ্রধানের উপদেষ্টা করা হয়েছিল। মুক্তিজোটের সদস্যপদ না থাকলে আমি ছড়ি প্রতীক নিয়ে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করলাম কীভাবে? আকতার হোসেন ঢাকা-৬ আসনে নির্বাচন করলেন কীভাবে? এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের নতুন কমিটি হতেই পারে। তবে নতুন কমিটি জমা দিলেই তো অনুমোদন হবে না। নির্বাচন কমিশন দলের গঠনতন্ত্র যাচাইবাছাই করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর