নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় (ভোকেশনাল) অংশ নেওয়া তিন নারী জনপ্রতিনিধির মধ্যে দুজন সফলতার সঙ্গে পাস করেছেন। এ ছাড়া তারা প্রমাণ করেছেন, বয়স নয়, ইচ্ছাশক্তি আর প্রচেষ্টা থাকলে সফলতা আসবেই। শুধু তাই নয়, জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করতে গেলে শিক্ষার প্রয়োজন হয়, তা তারা উপলব্ধি করেছেন। বাগাতিপাড়া কেন্দ্র থেকে তারা পরীক্ষায় অংশ নেন। বাগাতিপাড়া উপজেলায় পাস করা দুই জনপ্রতিনিধি হলেন, পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. শিলা খাতুন (৩০) এবং একই ইউনিয়নের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. শাহানাজ পারভীন (৩২)।
অন্যদিকে কৃতকার্য হতে না পারা অপরজন হলেন বাগাতিপাড়া পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মুর্শিদা বেগম (৪৩)। তারা সবাই বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। জানা যায়, ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন ট্রেডের পরীক্ষার্থী শিলা খাতুন জিপিএ-৪ দশমিক ২৯ এবং ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডের পরীক্ষার্থী শাহানাজ পারভীন জিপিএ-৪ দশমিক ১১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে অসুস্থতার কারণে পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকায় কৃতকার্য হতে পারেননি আরেক জনপ্রতিনিধি মুর্শিদা বেগম। ইউপি সদস্য শিলা খাতুন জানান, অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাকে বিয়ে দেওয়ায় লেখাপড়ার আক্ষেপটা রয়ে যায়। অবশেষে এবার এসএসসি পাস করায় তিনি আনন্দিত। তবে তিনি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চান। সাবেক ইউপি সদস্য শাহানাজ পারভীন বলেন, অল্প বয়সে বিয়ে দেয় তার পরিবার। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা থেকেই দীর্ঘ সময় পর কারিগরি শাখায় ভর্তি হয়েছিলেন। এসএসসি পাস করায় তিনি সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সবার দোয়া চান। তিনি বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছি। উচ্চশিক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাব। বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বি এম ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সামসুন্নাহার বলেন, বয়সের বাধাকে উপেক্ষা করে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দুই নারী জনপ্রতিনিধি পাস করেছেন, এটা আনন্দের ব্যাপার। যিনি পাস করতে পারেননি, যাতে আগামী বছর পাস করতে পারেন তার জন্য শুভকামনা রইল।
