মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ হতে পারে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার

এফবিসিসিআই আয়োজিত সভায় বক্তাদের অভিমত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ এবং তুরস্কের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিপুল সম্ভাবনা বিরাজ করছে। ভৌগোলিকভাবে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যবর্তী অবস্থান হওয়ায় এ দুই মহাদেশে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তুরস্ক যেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ঠিক তেমনিভাবে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত বাংলাদেশকেও আসিয়ান এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ও তুরস্ক উভয়ই এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইউরোপ এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে। গতকাল মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে বাংলাদেশে সফররত তুরস্কের ফরেন ইকোনমিক রিলেশনস বোর্ড অব তুর্কিয়ে (ডিইআইকে) এবং তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির বাইরেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব দিন দিন জোরদার হচ্ছে।

এফবিসিসিআইর সভাপতি বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ তুরস্কে রপ্তানি করেছে ৪৯৫ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। দেশটি থেকে আমদানি করেছে ৩৮০ দশমিক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ও কাঁচামাল। বাংলাদেশে বর্তমানে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র, রাসায়নিক শিল্প, প্রকৌশল, নির্মাণ ও জ্বালানি খাতে তুরস্কের ১৫ থেকে ২০টি কোম্পানি কাজ করছে। ১০০টিরও বেশি তুর্কি কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের সেবা প্রদান করছে। এ কোম্পানিগুলো উৎপাদন, নির্মাণ ও প্রকৌশলে নিজেদের দক্ষতা বিনিময়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বাণিজ্য বহুমুখীকরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যতে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ওষুধ, পর্যটন, পাট, জ্বালানি এবং প্রযুক্তির মতো খাতগুলোতে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারে তুরস্ক। ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন তুর্কি-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারপারসন হিদায়েত ওনুর ওজদেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমার কাছে সেকেন্ড হোম কান্ট্রির মতো। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি।

দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার করার অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক দিন দিন জোরদার হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতাদের আগামীতে তুরস্ক সফরের আমন্ত্রণ জানান।

এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিন হেলালী বলেন, তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হব। তুরস্কের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা পরিচালনার এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।

সভায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, এফবিসিসিআই পরিচালক, মহাসচিব মো. আলমগীর, ডিইআইকে এবং তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি দলের সদস্য এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ীরা।

সর্বশেষ খবর