শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
খুলনা

বন্ধ পাটকলের জমিতে অর্থনৈতিক জোন করার জোরালো দাবি

♦ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আসছেন আজ ♦ পাটকল মালিকরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়ে মিল বন্ধ করে দিয়েছেন

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

চার বছর বন্ধ থাকার পর খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের মধ্যে ৪টিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্বল্প পরিসরে চালু হয়েছে দৌলতপুর ও জেজেআই পাটকল। বাকি পাটকলগুলো কবে চালু হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। ফলে দীর্ঘদিনেও সেখানে প্রত্যাশা অনুযায়ী উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি। এ অবস্থায় খুলনার পাটকলগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক খুলনায় আসছেন। তিনি আজ বিজেএমসি নিয়ন্ত্রণাধীন খালিশপুর জুটমিলসহ অন্যান্য মিল পরিদর্শন ও বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ)-এর সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এদিকে বন্ধ হওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল ইজারা না দিয়ে সেখানে অর্থনৈতিক জোন করার দাবি তুলেছেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও উন্নয়ন কর্মীরা। তাদের মতে, নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা পাটকলের জমিতে একই সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগে সুবিধা রয়েছে। এখানে নতুন করে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে না। মিলের জমিতে অর্থনৈতিক জোন করে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে পদ্মা সেতু মোংলা বন্দরের সুবিধা কাজে লাগানো যাবে। পাশাপাশি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, দৌলতপুর ও জেজেআই পাটকল ইজারা প্রদানের পর স্বল্প পরিসরে চালু হলেও প্রত্যাশিত উৎপাদন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি। দুর্নীতির কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের ইজারা দেওয়ার অতীত ইতিহাস সুখকর নয়। এর আগে ইজারা দেওয়া খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত অ্যাজাক্স ও সোনালী জুটমিল লুটপাটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। পাটকল মালিকরা ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়ে মিল বন্ধ করে দিয়েছেন।

মিলের জমিতে অর্থনৈতিক জোন করার দাবিতে মত দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরাও। খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন বলেন, খুলনার অধিকাংশ পাটকলই একই জায়গায়। সহজেই পাটকলের জমিতে অর্থনৈতিক জোন করে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যায়। প্রধানমন্ত্রী খুলনায় দুটি অর্থনৈতিক জোন করার ঘোষণা দিলেও জমি পাওয়া যায়নি। মিলের জমিতে অর্থনৈতিক জোন করা গেলে সেখানে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হবে। শিল্পনগরী খুলনা হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের অর্থনীতিও বদলে যাবে।

বিজেএমসি খুলনা কার্যালয়ের আঞ্চলিক সমন্বয় কর্মকর্তা মো. গোলাম রব্বানী জানান, লোকসানের কারণ দেখিয়ে ২০২০ সালের ২ জুলাই খুলনা অঞ্চলে রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল বন্ধ করা হয়। এর ফলে চাকরি হারান ৩৩ হাজার ৩০৬ জন শ্রমিক। তিনি বলেন, এরই মধ্যে চারটি মিল বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেওয়া হয়েছে। আরও দুটি মিল ইজারা প্রদানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

সর্বশেষ খবর