সোমবার, ২০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ধানের দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

চাহিদা ৬০ লাখ টন, উৎপাদন ১ কোটি ২২ লাখ টন

নজরুল মৃধা, রংপুর

ধানের ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কৃষক। ফসল ওঠার মৌসুমে একটি সিন্ডিকেট মাঠপর্যায়ে কৃষকদের থেকে কম দামে খাদ্যশস্য ক্রয় করে মজুতের পাহাড় গড়ে মুনাফা লুটছে। সরকার মজুতবিরোধী অভিযানের ঘোষণা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তার ওপরে এবার তাপপ্রবাহ এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বোরো আবাদে সেচ বাবদ কৃষকের বাড়তি খরচ হয়েছে। ফলে ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একাধিক কৃষক জানান, বর্তমানে বাজারে বোরো প্রতি মণ ধান ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দামে ধান বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না। এ অঞ্চলে পুরোপুরি ধান কাটা হলে সিন্ডিকেট করে ধানের দাম আরও কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। এ অঞ্চলের কৃষকরা শুধু খাদ্যশস্য ধান-চালেই উদ্বৃত্ত নয়। তারা চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ শাকসবজি উৎপাদন করে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও প্রতিটি পণ্যেই তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান-চাল ক্রয়সহ কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে কৃষকরা মোটামুটি ফসলের দাম পাচ্ছেন। তিনি আশা করেন, ধানের দাম আরও বাড়বে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের ১৬ জেলায় মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ২৭ লাখ ১৬ হাজার ৩৫৪ হেক্টর। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে ১২ লাখ ৯৮ হাজার হেক্টর এবং রাজশাহী অঞ্চলে প্রায় সোয়া ১৪ লাখ হেক্টর। উত্তরাঞ্চলে মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি। এর মধ্যে ১১ শতাংশ রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধ এবং খাদ্য গ্রহণে অনুপযোগী। একজন মানুষ প্রতিদিন ৪৫৩ দশমিক ০৬ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করতে পারে। সেই হিসাবে এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি বছর খাদ্যের চাহিদা হচ্ছে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলের খাদ্য চাহিদা ২৯ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন এবং রাজশাহী অঞ্চলের চাহিদা ৩০ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন।

সূত্র জানায়, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে প্রতি বছর আমন, আউশ ও বোরো ফসলের উৎপাদন হয় ১ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। মোট উৎপাদন থেকে চাহিদা বাদ দিয়ে এক বছরের এ অঞ্চলে খাদ্যের উদ্বৃত্ত থাকছে ৫৬ লাখ মেট্রিক টনের ওপর। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে উদ্বৃত্ত থাকছে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন এবং রাজশাহী অঞ্চলে উদ্বৃত্ত থাকছে প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিক টন। এই উদ্বৃত্ত খাদ্য এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর