দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ন্যাশনাল হাউস হোল্ড ডেটাবেজ (এনএইচডি) প্রজেক্টের নামে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে দুদকে করা আবেদন ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে আদেশে।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবু জাফর শেখ মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। পরে আইনজীবী আবু জাফর শেখ মানিক সাংবাদিকদের বলেন, আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি রুলও জারি করেছেন। রুলে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না-তা জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে দুদকের চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আইনজীবী মানিক জানান, এনএইচডি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো একটি প্রকল্প চালু করে। এ প্রকল্পের জন্য ৫৪৫ জন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দেয়। নিয়োগকৃত জনবলকে দাফতরিক বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য উপজেলা ও জেলা পরিসংখ্যান অফিসগুলোয় সংযুক্ত করে। ২০২২ সালের জুনে তাদের জেরক্স ইন্ডিয়া কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান ১৪টি জেলার তথ্য আংশিক সংশোধন ও ৫০টি জেলার ডেটা অসমাপ্ত রেখে প্রকল্পের ১১২ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৬২২ টাকা উত্তোলন করে নেয়। তিনি আরও বলেন, এ প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া ৫৪৫ ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে মাসিক বেতন-ভাতাদি উপরোক্ত কর্মকর্তারা প্রদান না করে এবং প্রজেক্টের টিপিপির সুপারিশ অনুযায়ী তাদের রেভিনিউ খাতে নিয়োগ না দিয়ে সরকারি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করে করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ভুক্তভোগী ৭৩ জন প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেন। এ ছাড়া অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা চেয়ে দুদকের কাছে আবেদন করেন। ওই আবেদনে দুদকের সাড়া না পেয়ে ১৩ মে হাই কোর্টে রিট দায়ের করেন ৭৩ জন।
