বুধবার, ২২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ক্লিন এনার্জিতে টেকসই ভবিষ্যৎ : পিটার হাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে ক্লিন এনার্জিতে ক্ষমতায়িত করা মানেই আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উজ্জ্বল, টেকসই ভবিষ্যৎ গড়া। গতকাল ঢাকায় ইএমকে সেন্টারে অনুষ্ঠিত ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরামে (আইপিবিএফ) বাংলাদেশে বিল্ডিং দ্য ফাউন্ডেশন ফর ক্লিন এনার্জি নিয়ে একটি আলোচনা সভায় পিটার হাস এ কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, আপনারা জানেন যে বিশ্বের জীবাশ্ম জ্বালানি সরবরাহ সীমিত। আগামী বছরগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানির সরবরাহ কম হতে পারে। এটি পরিষ্কার এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সংস্থানগুলোতে একটি টেকসই, ন্যায়সঙ্গত ও ন্যায্য শক্তি স্থানান্তর অগ্রসর করা জরুরি। তিনি বলেন, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও জ্বালানি বাজারে ধাক্কা খায়।

এ সময় দেশগুলো জ্বালানির বিদেশি উৎসের ওপর তাদের নির্ভরতা সম্পর্কে তীব্রভাবে সচেতন হয়। আগ্রাসনের সেই প্রভাব বিশ্বব্যাপী শক্তি সরবরাহের আন্তসংযুক্ততার ওপর আলোকপাত করে।

তিনি বলেন, এর থেকে আমরা যে শিক্ষা গ্রহণ করি তা স্পষ্ট। রাশিয়া বিশ্বকে দেখিয়েছে যে, তারা শক্তি অবকাঠামোকে জিম্মি করে রাখবে তার অশুভ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য। তাই সমস্ত জাতিকে সম্পদের বৈচিত্র্যময় পোর্টফোলিওর ওপর ভিত্তি করে তাদের শক্তি সুরক্ষা দৃঢ় করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের অভ্যন্তরীণ সরবরাহে বাংলাদেশ ভাগ্যবান। আমি এটা বলতে গর্বিত যে, মার্কিন ব্যবসাগুলো দুই দশক ধরে বাংলাদেশকে তার উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন চালানোর জন্য সেই সম্পদগুলো ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, কিন্তু আমি আগে উল্লেখ করেছি, সেই সরবরাহগুলো অসীম নয়। বাংলাদেশ শিগগিরই নতুন জায়গায় আরও গ্যাস খুঁজে পেতে পারে, অবশেষে সেগুলোও ফুরিয়ে যাবে। নবায়নযোগ্য এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সম্পদ বাংলাদেশের জন্য, দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ও বিশ্বের জন্য এ শক্তি পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি।

তিনি বলেন, সৌর, বায়ু, হাইড্রো, হাইড্রোজেন ও অন্যান্য শক্তির উৎসগুলো কাজে লাগানোর উপায়গুলো সন্ধান করা হলো শক্তি সুরক্ষার পথ এবং অব্যাহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশকে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করার জন্য আমার সরকার এ দেশের ক্লিন এনার্জি ট্রানজিশনের ভিত্তি তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকার, বেসরকারি খাত, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সমমনা সরকারগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমি সন্তুষ্ট আজ আমাদের এখানে অনেক নিবেদিতপ্রাণ পেশাদার রয়েছেন, যারা এ পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত, আর্থিক, আইনি এবং নীতিগত দক্ষতার প্রতিনিধিত্ব করে। আপনারা সবাই আমার চেয়ে ভালো জানেন যে, আমরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি।

রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, বাংলাদেশকে একটি ন্যায্য শক্তির উত্তরণ অর্জনের জন্য সরকার, বেসরকারি খাত এবং সুশীল সমাজের অবদান নিতে হবে। স্মার্ট বিনিয়োগ এবং আন্তসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য, আন্ডারপারফের বেসরকারিকরণকে উৎসাহিত করার জন্য ভালো নীতির প্রয়োজন হবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পদ অরমিং, নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ এবং সবচেয়ে ক্ষতিকারক জীবাশ্ম জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদন সুবিধাগুলো পর্যায়ক্রমে আউট করা।

তিনি বলেন, এটি রাতারাতি হবে না। এটি পূরণ করতে বছর লাগবে। তবে আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি এবং আমাদের সম্মিলিত জ্ঞান ভাগ করে নিই তবে আমরা এটি দ্রুত সম্পন্ন করতে পারি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর