শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
পতেঙ্গা

সৈকত রক্ষায় নো কম্প্রমাইজ

অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানসহ নানা স্থাপনা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের খেজুরতলা থেকে নেভাল একাডেমির আগ পর্যন্ত অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানসহ নানা স্থাপনা। সৈকতে চালানো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ঘণ্টাভিত্তিক ভাড়া দেওয়া হয় ঘোড়া। তবে এবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত পতেঙ্গা রক্ষায় নো কম্প্রোমাইজ নীতি অবলম্বন করেছে। গ্রহণ করা হয়েছে কার্যকর পদক্ষেপ।

পতেঙ্গা সৈকত রক্ষায় চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করবে জেলা প্রশাসন। উচ্ছেদ করা হবে অবৈধ স্থাপনা। সৈকতেই স্থাপন করা হবে সৈকত ম্যানেজমেন্ট কমিটির ক্যাম্প। সৈকতে চলতে দেওয়া হবে না কোনো ধরনের যানবাহন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ঘোড়া ভাড়া ও যান চলাচল বন্ধে আজ অভিযান পরিচালনার কথা। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক বেড়াতে আসে। ছুটির দিনে এ সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম সৈকত ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘আমি খবর নিয়ে দেখলাম সৈকতে চলছে ঘোড়া ভাড়া দেওয়া, নানা ধরনের যানবাহন। এগুলো বন্ধ করা হবে। উচ্ছেদ করা হবে সব অবৈধ স্থাপনা। এসব কার্যক্রম তদারকি করতে আমি সারপ্রাইজ ভিজিটও করব। প্রাকৃতিক এ সৈকতে কোনো ধরনের অনিয়ম চলতে দেওয়া হবে না। আমরা চাই এ সৈকতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গিয়ে একটু আনন্দে নিজের মতো করে সময় কাটাক।’ তিনি বলেন, ‘সৈকতে অবৈধ দখলদারদের সরিয়ে সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হবে। তা ছাড়া সৈকতে সিসি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত বাতি ও শৌচাগার নির্মাণ করা হবে। এসব রক্ষায় নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে খাবারের মূল্য তালিকা প্রদর্শন, খাবারের মান নিয়ন্ত্রণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সহায়তায় খাবার দোকানিদের প্রশিক্ষণ প্রদান, সৈকত থেকে ঘোড়াসহ সব গাড়ি অপসারণ এবং সি সাইড থেকে সব দোকান কান্ট্রি সাইডে নির্দিষ্ট পরিমাপে করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানা যায়, পতেঙ্গা সৈকতকে নয়নাভিরাম রূপ দিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম সৈকত ম্যানেজমেন্ট কমিটি। এ নিয়ে ১৬ মে কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সৈকতে পর্যটকদের সুবিধাসংবলিত অবকাঠামো নির্মাণ, দোকানগুলো সুশৃঙ্খল ও পুনর্বাসন করা, টয়লেট, চেঞ্জিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ, ফটোগ্রাফারসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারীর সংখ্যা নির্দিষ্টকরণ, সাময়িক পরিচয়পত্র প্রদান, সেবামূল্য নির্ধারণ, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের অফিস নির্মাণ ও সৈকতসংশ্লিষ্ট এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়।

জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরের সাগরিকা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর উপকূলে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চিটাগং সিটি আউটার রিং রোড’ নির্মাণ করে। প্রকল্পের আওতায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো হয় ফুলের গাছ ও বাগান। কিন্তু অবৈধভাবে স্থাপনা ও দোকান নির্মাণ করে এর সৌন্দর্য নষ্ট করা হয়। তা ছাড়া, সিডিএ দেড় শ দোকান নির্মাণের অনুমতি দিলেও সেখানে অন্তত ৭০০ দোকান নির্মিত হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে এসব দোকান থেকে দৈনিক ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর