শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বসুন্ধরার সুদমুক্ত ঋণ পেয়ে আত্মনির্ভরশীল ফাতেমা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

বসুন্ধরার সুদমুক্ত ঋণ পেয়ে আত্মনির্ভরশীল ফাতেমা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি গ্রামের অতিদরিদ্র গৃহিণী ফাতেমা বেগম। সার্বক্ষণিক অভাব-অনটনের সংসারে স্বামী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তার পরিবার। সংসার জীবনের শুরুতেই চরম অর্থনৈতিক সংকট আর অভাব-অনটন সঙ্গী ছিল। স্বামী ওয়ায়েস করনীর জন্ম থেকেই দুই পায়ে সমস্যা। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এবং পা টেনে টেনে চলাফেরা করেন। এক নাগাড়ে দীর্ঘক্ষণ পথ চলতে পারেন না। শারীরিক সমস্যার কারণে কোনো কাজকর্মও করতে পারেন না।

তবু ফাতেমা বেগম দমে যাননি। সংসারে সুদিন ফেরাতে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন থেকে সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে তার স্বামীকে গ্রামের বাজারে একটি টং দোকান দিয়ে বসিয়ে দেন। এ দোকানের আয় দিয়ে পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মিটিয়ে অল্প অল্প করে সঞ্চয় জমা করতে থাকেন ফাতেমা। এই সঙ্গে ঋণও পরিশোধ করতে থাকেন।

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের এই সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে ব্যবসা করে দিনে দিনে স্বাবলম্বী হতে থাকে ফাতেমার পরিবার। অচল স্বামীরও সময় কেটে যায় সারা দিন দোকানে মালামাল বিক্রি করে। সংগ্রামী নারী ফাতেমা বেগম জানান, জন্মের ছয় মাস পরই তার স্বামীর দুই পায়ে সমস্যা দেখা দেয়। এর পর থেকে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারেন না। সারা দিন বাড়িতে বসেই সময় কাটত। আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপড়শির সহযোগিতায় সংসার চলত কোনোরকমে। এ অবস্থায় বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন সুদমুক্ত ঋণ সহযোগিতা দিচ্ছে জেনে তিনি প্রথমে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। দ্বিতীয়বার আরও ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। এ টাকায় গ্রামের বাজারে টং দোকান করে স্বামীকে সেখানে বসিয়ে দেন। ফাতেমা বলেন, ‘সেই দোকান এখন ভালোই চলছে।’ পাশাপাশি তিনি একটি সেলাই মেশিন কিনেছেন। এখন দুজনের আয়ে তাদের সংসার ভালোই চলছে। এ ঋণসহায়তার প্রতিদানস্বরূপ বসুন্ধরার মালিকের জন্য সব সময় মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন ফাতেমা। কারণ বসুন্ধরার মাধ্যমেই তাদের অভাবের সংসার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ছেলেমেয়েদেরও এখন স্কুলে পড়াশোনা করাচ্ছেন। স্বামী ওয়ায়েস করনী আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারি না। আমার স্ত্রী গত বছর বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন থেকে সুদমুক্ত ১৫ হাজার টাকা ঋণ পায়। তারপর আবার ১৫ হাজার টাকা ঋণ পেয়েছে। এ টাকা দিয়ে একটি টং দোকান দিয়েছি। ভালো বেচাকেনা হয়। এখন সংসার চালাতে আর কষ্ট হয় না। শুধু আমিই না, আমার মতো হাজার হাজার অসহায় মানুষ সুদ ছাড়া টাকা এনে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো বসুন্ধরার চেয়ারম্যানের জন্য কিছু করতে পারব না, তবে মন থেকে তাঁর জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যেন সব সময় তাঁকে সুস্থ রাখেন। আর তিনিও যেন এভাবে অসহায় মানুষদের সাহায্য করেন।’

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর