সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেও ঐতিহ্য ফেরেনি রেশমের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেও ঐতিহ্য ফেরেনি রেশমের

রেশমের সুদিন ফেরাতে নেওয়া হয়েছিল মেগা প্রকল্প। বার্ষিক ১০০ মেট্রিক টন রেশম সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে প্রায় হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সেই সঙ্গে রাজশাহী রেশম কারখানায় আরও ২৩টি লুম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২০ সালে নেওয়া সেই প্রকল্পেও ঐতিহ্য ফেরেনি রেশমের। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ২০০২ সালে বন্ধ হওয়ার ১৬ বছর পর ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই মাসে রাজশাহী রেশম কারখানায় পরীক্ষামূলকভাবে ১৯টি লুম চালু করা হয়। ২০২০ সালের জুলাই মাসে আরও ২৩টি লুম চালু করা হয়।

সূত্র জানায়, রেশম শিল্পের উন্নয়নে বোর্ড বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। তার মধ্যে বার্ষিক ১০০ মেট্রিক টন রেশম সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে প্রায় হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় সংবলিত মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ১০ হাজার রেশম চাষিকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে অর্থ সহায়তা দেওয়াসহ চীন ও ভারত থেকে উন্নত রেশম কীট ও উন্নত তুঁত জাত আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।    

রাজশাহী রেশম মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী জানান, রেশমের ঐতিহ্য ফেরাতে চাষি বাড়াতে হবে। কিন্তু দিন দিন চাষি কমছে। দেশে উৎপাদন হওয়া সুতার যে দাম, তার চেয়ে কম দামে বাইরে থেকে সুতা আমদানি করা যায়। তাই রেশমশিল্প মালিকরা বাইরে থেকে সুতা আমদানি করছেন। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকে এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। ঐতিহ্য ফেরানোর প্রকল্প কোনো কাজে আসবে বলে তিনি মনে করেন না। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খানের মতে, রেশম চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রকল্প নেওয়া হলে কাজে আসত। এখানে তেমনটা হয়নি। ফলে হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেও ঐতিহ্য ফেরার লক্ষণ দেখছেন না রেশমের। উল্লেখ্য, রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় এই রেশম কারখানা। রেশমের উন্নয়নে রাজশাহীতেই স্থাপন করা হয় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়। কিন্তু ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় রেখে ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানার প্রায় ৩০০ শ্রমিক। সে সময় অনেক আন্দোলন করেও কারখানাটি চালু করতে পারেনি রাজশাহীবাসী। দীর্ঘদিন পর রাজশাহী সদর আসনের সাবেক এমপি ফজলে হোসেন বাদশা রেশম বোর্ডের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নেন। তার প্রচেষ্টায় ২০১৯ সালের ২৭ মে পরীক্ষামূলকভাবে কারখানার ৫টি লুম চালু করা হয়। পরে চালু হয় আরও একটি। এরপর থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রেশম কারখানাটি।

 

সর্বশেষ খবর