শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

খুলনায় মাদক সিন্ডিকেট ও টার্গেট কিলিং নিয়ে উদ্বেগ

এলাকাভিত্তিক অপরাধীদের তালিকা তৈরি করে পুলিশের নজরদারির দাবি

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

মাদকের অর্থ লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বে খুলনার দক্ষিণ টুটপাড়ায় রনি সরদার (২৪) নামে এক যুবককে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বিরোধের কারণে দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে থাকার পর গত ২৮ মে তাকে ডেকে এনে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ওয়ান শুটারগান, দুটি পিস্তলের গুলি, ধারালো ছুরি ও বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃতরা। একইভাবে ২৩ জানুয়ারি ময়লাপোতা মোড়ে সাদিকুর রহমান নামে আরেক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনিও মাদক সিন্ডিকেট ও আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বে দীর্ঘদিন বাইরে থাকার পর এলাকায় ফিরলে হত্যাকান্ডের শিকার হন। ২০২৩ সালে ৫ অক্টোবর মাদক বেচাকেনা দ্বন্দ্বে গোবরচাকা মোড়ে ইমন শেখ নামে অপর যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। বেশিরভাগ হত্যাকান্ডের পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে সবকিছু ধামাচাপা পড়ে যায়।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র করেই নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গ্যাং তৈরি করে উঠতি বয়সি যুবকরা চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। গত দুই মাসে পুলিশের অভিযানে মাদকসহ গ্রেফতার হওয়া বেশিরভাগই উঠতি বয়সি যুবক। মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম জানান, নগরীতে আশিক ও নূর আজিম গ্রুপ নামে দুটি সিন্ডিকেট মাদক কেনাবেচার আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। গ্রুপের প্রধানরা কে কোথায় মাদক বিক্রি করবে ঠিক করে দেয়। এরা আত্মাগোপনে থাকে ও ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, মাদক কারবার, অস্ত্র ব্যবসায় জড়িতদের সব তথ্যই পুলিশের কাছে আছে। ব্যাটে বলে হলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।

জানা যায়, খুলনা নগরীতে টিপসি, ডেঞ্জার, গোল্ডেন বয়েজ, ইব্রাহিম গ্রুপ, গ্রেনেড বাবু প্রুপ, রয়েল গ্রুপ, সাব্বির গ্রুপসহ শতাধিক গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। রূপসার লবণচরা, টুটপাড়া, বালুর মাঠ, গোবরচাকা গাবতলা মোড়, হাজী ইসমাইল রোড, শেখপাড়া খলিল চেম্বার মোড়, বানিয়াখামার, দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে।

পুলিশ জানায়, আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় ২৫ মার্চ রাতে মহেশ্বেরপাশা তরুণ সংঘের মাঠে সংঘবদ্ধ গ্যাংয়ের সদস্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্র হুজাইফা খানকে জখম করে। এ ঘটনায় পুলিশ অস্ত্রসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, অতীতে মাদক কারবারি ও অপরাধীদের একটা তালিকা ছিল পুলিশের কাছে। কিন্তু বর্তমানে তা দেখা যায় না। সাধারণ মানুষ কিছুই জানতে পারে না। তালিকা থাকলে নজরদারি বাড়ানো যায়। এতে সাধারণ মানুষও তথ্য দিয়ে অপরাধ নির্মূলে সহায়তা করতে পারবে।

সর্বশেষ খবর