টানা তিন দিনের বর্ষণে তলিয়ে যায় নগরের অনেক নিম্নাঞ্চল। তৈরি হয় মারাত্মক জলাবদ্ধতা। ফলে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে নগরের সড়কের পর সড়ক। বেশি ক্ষতি হয়েছে নগরের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী ও যানবাহন চালককে। বিশেষ করে ছোট যানবাহনগুলোকে চলতে হচ্ছে হেলেদুলে। তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রকৌশল বিভাগ বর্ষণে নগরের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো রুটিন ওয়ার্কের অংশ হিসেবে সংস্কার করছে।
নগরবাসীর অভিযোগ, মানহীন উপকরণ দিয়ে সড়কগুলো নির্র্মাণ করা হয়। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকলেও চসিকের নিয়মিত তদারকির অভাবে মানসম্পন্ন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। ফলে বৃষ্টি হলেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় সড়ক।
জানা যায়, গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কখনো মূষলধারে, কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। এতে নগরের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। অনেক সড়কে তৈরি হয় ছোট-বড় গর্ত। নগরের এশিয়ান হাইওয়ের বহদ্দার হাট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়। বহদ্দার হাট থেকে খতিবের হাট-ফরিদেরপাড়া ও শমসেরপাড়া ডেন্টাল কলেজ সড়কটির অবস্থাও চরম বেহাল। গরীবুল্লাহ শাহ (রহ.) মাজারের পর থেকে গৃহায়ণের মোড় পর্যন্ত পুরো সড়ক ঢেকে যায় পাহাড়ের মাটিতে।বায়েজিদ বোস্তামি সড়কের মেয়র গলি থেকে ফ্লাইওভারের মুখ পর্যন্ত সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আগ্রাবাদ এলাকায় জলাবদ্ধতার পানি নেমে যাওয়ার পর দৃশ্যমান হচ্ছে অলিগলির সড়কের ক্ষতচিহ্নগুলো। কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ এলাকার উপসড়কগুলো এবং বাকলিয়া কেবি আমান আলী সড়ক ও চকবাজার থেকে রাহাত্তারপুল সড়কটিরও বেহাল অবস্থা।
বাকলিয়া কেবি আমান আলী সড়ক এলাকার বাসিন্দা সাকিব মাহমুদ বলেন, টানা বর্ষণে এ সড়কটি পিচ উঠে যায়। ফলে সড়ক দিয়ে হাঁটাও দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া ছোট যানবাহনগুলোও চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন বলেন, টানা বর্ষণে নগরের অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে নিয়মিতই সংস্কার কাজ চলমান আছে। তাছাড়া, চসিকের প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে নগরের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর একটি তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী সড়কগুলো মেরামতের কাজ করা হবে।
চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ১ হাজার ৪৪২ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মোট সড়ক আছে ৩ হাজার ৪৫৯টি। এর মধ্যে অ্যাসফল্ট সড়ক আছে ১ হাজার ৪৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১ হাজার ৭৫০টি। কংক্রিট সড়ক আছে ৩৬৪ কিমি দৈর্ঘ্যরে ১ হাজার ৪২৭টি। ব্রিক সলিং সড়ক আছে ১৫ কিমি দৈর্ঘ্যরে ১৪১টি। কাঁচা সড়ক আছে ১৭ দশমিক ৫ কিমি দৈর্ঘ্যরে ১৪১টি।