সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ধূম্রজাল

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ধূম্রজাল

‘সেই ভেইঙ্গে যাওয়াততে (বেড়িবাঁধ) কোনো সাজ খাইছি, কোনো সাজ না খাইয়ে রইছি। পানির কষ্ট তো আছেই, লোকের কলেততে পানি আনতি হয়’- ঘূর্ণিঝড় রিমাল তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত উপকূলে এখনো হতাশার দীর্ঘশ্বাস। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২৬ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় রিমাল তান্ডবে খুলনার উপকূলীয় কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের ৩৫টি পয়েন্টে দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়। লবণপানি ঢুকে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, পুকুর ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। জীবন-জীবিকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর সরকার বাঁধ নির্মাণের বরাদ্দ দিলেও শেষ পর্যন্ত টেকসই বাঁধ নির্মাণ হয় না। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্মাণকাজে ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে ধূম্রজাল তৈরি করে। কখন কী কাজে কত টাকার বাজেটে কোন ঠিকাদার কাজ করছেন কেউ জানে না। ঠিকাদারি কাজের ৪-৫ দফা হাতবদলের পর বাঁধে ‘সাবকনট্র্রাক্টর’ যেনতেন নিম্নমানের নির্মাণকাজ করেন। খুলনা-৬ আসনে সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান বলেন, ‘বাঁধ মেরামত কাজ নিয়ে আমরা অন্ধকারে থাকি। কোথাও ভাঙনের কিছুদিন পর দেখি কেউ একজন নির্মাণকাজ করছে। কীভাবে কাজ করছে, কে টেন্ডার পাইল, কে এদের নিয়োগ করল, কত টাকা এদের বরাদ্দ কিচ্ছু আমরা জানি না।’

এদিকে ১ জুন কয়রার দশহালিয়া বাঁধ মেরামত কাজ দেখতে এসে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন পাউবো কর্মকর্তারা। ২৯ মে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি কোনোমতে আটকালেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসহযোগিতায় বাঁধটি পুনরায় ভেসে যায়। পাউবো, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল খুলনা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা জানান,  দশহালিয়া বেড়িবাঁধ মেরামতে বালির দরকার ছিল, বালি ও পরিবহনে ভলগেট (জাহাজ) ম্যানেজ করতে না পারায় বাঁধ পুনরায় ভেঙে যায়। এখন এ কাজে একজন ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানান ওই ঠিকাদারকে গতকাল পর্যন্ত বাঁধে দেখা যায়নি।

অপরদিকে বর্ষার আগে পাউবোকে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে নির্দেশনা দিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব নাজমুল আহসান। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে বলেন, যেসব বাঁধ প্রায়শই ভেঙে যায় সেগুলো চিহ্নিত করে সেখানে টেকসই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর