শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সহিংসতা খুনোখুনি বাড়ছে খুলনায়

ফের ছুরিকাঘাতে যুবক হত্যা, উদ্বিগ্ন অভিভাবক সাধারণ মানুষ

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

সহিংসতা খুনোখুনি বাড়ছে খুলনায়

মাদকের অর্থ লেনদেন, পূর্ব শত্রুতা বা আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে খুলনা নগরীতে সহিংসতা খুনোখুনি বেড়েছে। ২৮ মে দক্ষিণ টুটপাড়া এলাকায় রনি সরদার (২৪) নামে যুবককে গুলি করে হত্যার আট দিনের মাথায় খালিশপুর জোড়াগেট এলাকায় শাওন (২৬) নামের আরেক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি জোড়াগেট এলাকার বাচ্চু তালুকদারের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আসামিদের সঙ্গে শাওনের পূর্ব শত্রুতা আছে। অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে তাকে হত্যা করা হয়। এর আগে ২৮ মে মাদকের অর্থ লেনদেন নিয়ে বিরোধে টুটপাড়ায় রনি সরদারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একইভাবে ২৩ জানুয়ারি ময়লাপোতা মোড়ে সাদিকুর রহমান ও ২০২৩ সালে ৫ অক্টোবর মাদক বেচাকেনা দ্বন্দ্বে গোবরচাকা মোড়ে ইমন শেখ নামের অপর যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২৫ মার্চ রাতে মহেশ্বেরপাশা তরুণ সংঘের মাঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র হুজাইফা খানকে জখম করে। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হত্যায় জড়িতরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, উঠতি বয়সি যুবকরা পাড়ামহল্লায় গ্যাং তৈরি করেছে। আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে তারা খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ছে। কয়েক বছর ধরে খুলনায় কিশোর গ্যাংয়ের দাপট রয়েছে। কোনো ধরনের মনিটরিং না থাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাই এখন উঠতি বয়সি যুবকদের গ্যাং তৈরি করছে।

জানা যায়, মূলত মাদক নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এলাকায় কয়েকটি গ্রুপ তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে ১২ থেকে ২০ বছর বয়সি গ্রুপ মাদক বিক্রি ও ছিঁচকে চুরির সঙ্গে জড়িত থাকে। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সি গ্রুপ মাদক বিক্রি ঝামেলামুক্ত রাখতে মাদক পয়েন্টের আশপাশে প্রভাব বিস্তার করে। এরাই মূলত আধিপত্য বিস্তারে মারামারি খুনোখুনিতে জড়িয়ে থাকে। এর বাইরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য আলাদা গ্রুপ করা হয়। প্রতিটি স্তরেই দিন শেষে মাদকের ‘কাঁচা টাকা’ ভাগাভাগি হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হয় না।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম জানান, নগরীতে কয়েকটি মাদক সিন্ডিকেটের খবর পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া আরও কয়েকটি গ্যাংয়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এলাকাভিত্তিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হবে।

সর্বশেষ খবর