মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম

কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে অলিগলিতে হাট

আয় নিয়ে শঙ্কায় বৈধ হাটের ইজারাদাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ঈদুল আজহা সামনে রেখে চট্টগ্রাম নগরের অলিগলিতে অস্থায়ী পশুর হাট বসাচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এসব হাটের বেশির ভাগের নিয়ন্ত্রণ করছেন বিভিন্ন এলাকার উঠতি বয়সী কিশোর গ্যাং নেতারা। নগরীর বাইরে বিভিন্ন উপজেলায়ও অবৈধ হাট বসানোর খবর পাওয়া গেছে। যে যার ইচ্ছেমতো হাট বসানোর কারণে বৈধ হাটের ইজারাদাররা লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্র কাজীর দেউড়ী এলাকায় খালি প্লটে পশুর হাট বাসিয়েছে শেঠ অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান আলম শেঠ। এই হাটের কারণে পার্শ্ববর্তী এস এস খালেদ সড়ক, কাজীর দেউড়ী মোড়ে গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত যানজট তৈরি হচ্ছে। গতকাল বিকালে সরেজমিন এই হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ২০টি গরু ও ভেড়া আনা হয়েছে হাটে। ক্রেতাদের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও এই হাটে পশু দেখতে ভিড় করছে।

জানতে চাইলে শেঠ অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মোহাম্মদ মহসিন হাটকে বৈধ দাবি করে বলেন, ‘এটা তো হাট না। মাটিরাঙায় আমাদের খামার আছে। সেখান থেকে গরু এনে এখানে বিক্রি করছি। বাইরের কেউ এখানে পশু বিক্রি করতে পারবে না। আমরা সব ধরনের অনুমোদন নিয়েছি।’

নগরীর মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়কে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অনুমোদিত পশুর হাট বিবিরহাট। অথচ এই সড়কের অদূরে হিলভিউ ও মোমেনবাগ এলাকায় একাধিক পশুর হাট দেখা গেছে। এর থেকে এক কিলোমিটার দূরে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার পেছনে একটি খালি প্লটে দেখা গেছে আরেকটি হাট। এ ধরনের হাটে ৫-১০টি করে গরু বিক্রির জন্য রাখা হয়। প্রতিটি গরু বিক্রির পর অন্য এলাকা থেকে আরও গরু আনা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এসব হাটের মতো নগরীর অলিগলি, সড়ক, বিভিন্ন আবাসিক এলাকার ভিতরে খালি প্লটে শতাধিক অবৈধ পশুর হাট দেখা গেছে। এসব হাটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুসারী, রাজনৈতিক প্রভাবশালী, ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী কিশোর গ্যাং নেতারা। এ ছাড়া আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার, কদমতলী ফ্লাইওভারের নিচে খালি জায়গায় নগরীর বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীদের গরু নিয়ে অপেক্ষমান থাকতে দেখা গেছে। শহরলাগোয়া হাটহাজারী উপজেলায় রেললাইনের ওপরও অবৈধ হাট বসানোর খবর পাওয়া গেছে।

চসিক রাজস্ব বিভাগ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম নগরীতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে এবার ১০টি পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পশুর হাট হলো সাগরিকা, বিবির হাট ও পোস্তার পাড়। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কর্ণফুলী গরুর বাজার, সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন মাঠ ও বাটারফ্লাই পার্ক সংলগ্ন মাঠসহ মোট সাতটি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, নির্ধারিত এই ১০টি হাটের বাইরে নগরীর কোথাও আর কোনো হাট বসানোর সুযোগ নেই। এসব হাটের কারণে সরকারকে রাজস্ব দিয়ে যারা হাট ইজারা নিয়েছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রতিবছর এরকম অবৈধ হাটের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। জানতে চাইলে চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধ হাটের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসব হাটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবেন।

 

 

সর্বশেষ খবর