বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাজধানীতে বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অর্ধশতাধিক, গ্রেফতার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর আদাবরে শ্যামলী হাউজিং দ্বিতীয় প্রকল্প এলাকায় গভীর রাতে বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। গত সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘুমন্ত অবস্থায় তারা অসুস্থ হন। নিহতের নাম মো. কবির হোসেন (৫০)। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থানার সফিউল্ল্যা মাঝির ছেলে কবির। চিকিৎসকরা বলছেন, কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের বিষক্রিয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশ বলছে, বিষাক্ত গ্যাস ছড়ানোর ঘটনায় কালু নামে এক ভাঙ্গারি দোকানদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শ্যামলী হাউজিং বেড়িবাঁধের ওপরে একটি পুরনো সিলিন্ডার পড়ে আছে। সিলিন্ডারের কাছাকাছি যেতেই নাকে তীব্র গন্ধ আসছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেড়িবাঁধের ওপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কালুর ভাঙ্গারি দোকানে এ সিলিন্ডারটি ভাঙার সময় হঠাৎ গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশপাশের টিনশেড বাসায় ঘুমিয়ে থাকা অর্ধশত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন স্মার্ট টেকনোলজির গ্যারেজ ম্যানেজার আবুল হাশেম। তিনি বলেন, বেড়িবাঁধের পাশেই স্মার্ট টেকনোলজি গাড়ির গ্যারেজ ও পরিবহন কর্মীদের থাকার স্থান।

এখানে অন্তত ২৫ জন লোক বিভিন্ন রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। আমিও গ্যারেজে আসা গাড়ির হিসাব-নিকাশ করে ঘুমিয়ে যাই। রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ বিষাক্ত গ্যাসের গন্ধে ঘুমের মধ্যেই অসুস্থতা বোধ করি। দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে দেখি অনেকেই আমার মতো ছটফট করছে। কেউ দৌড়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন। কেউ রুমের সামনেই অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। অফিসে বিষয়টি জানানোর পর কয়েকজন এসে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি আরও বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে আমি চলে এসেছি। তবে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গুরুতর অসুস্থরা হলেন- রুহুল আমিন, রাকিব, ওয়াদুদ, মন্নান, সিরাজ, জাহিদ, রাহিম, মেহেদী ও রকি। তারা স্মার্ট টেকনোলজির কর্মী। এ ছাড়াও স্থানীয় অনেকে অসুস্থ হয়েছেন।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান বলেন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নয়জন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। পাঁচজন এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মোট ১৪ জন রোগী এসেছিলেন। কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের বিষক্রিয়ায় এ দুর্ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের এডিসি মো. রওশানুল হক সৈকত বলেন, শ্যামলী হাউজিং বেড়িবাঁধে কালুর ভাঙ্গারি দোকান থেকে গ্যাসের বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ভাঙ্গারি দোকানদার কালুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর