বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুদকের তদন্তে মিলেছে সত্যতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুদকের তদন্তে মিলেছে সত্যতা

গাজীপুরে ১২ হাজার একর বনের জমি দখল করে গড়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কারখানা, দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট, বাড়িঘর, দোকানপাঠ ও হাটবাজার। এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর গত মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গাজীপুর কার্যালয় এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে সরেজমিন পরিদর্শন ও রেকর্ডপত্রের প্রাথমিক বিশ্লেষণে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় জমি দখলের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, গাজীপুরে বনের জমি দখল করে কারখানা প্রতিষ্ঠার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে দুদক টিম সেসব প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন এবং বন বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রও সংগ্রহ করে। সরেজমিন পরিদর্শন ও রেকর্ডপত্রের প্রাথমিক বিশ্লেষণে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় জমি দখলের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানিয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালিয়াকৈর ও সদর উপজেলায় ১২ হাজার ৩২১ একর বনের জমি অবৈধ দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ৫০০ একর জমি। গত এপ্রিলে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন শ্রীপুর ও গাজীপুর সদর উপজেলায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে মাত্র ৮.৭৯ একর বনভূমি। অবশিষ্ট ভূমি রিসোর্ট, বাড়িঘর, দোকানপাট, হাটবাজার ও কৃষিজমি হিসেবে দখল করা হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়িঘর তৈরি করে ২৩ হাজার ব্যক্তি দখল করেছে ১০ হাজার একরের বেশি বনভূমি। এতে বনভূমি উজাড় হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। এই আগ্রাসন ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বন বিভাগের। বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, শ্রীপুরে ধনুয়া মৌজায় আরএকে সিরামিকস চার একর, রশোওয়া স্পিনিং মিল চার একর, ডিবিএল সিরামিকস আট একর, অটো স্পিনিং মিলস ২.২০ একর, সাতখামাইর মৌজায় আকন্দ গার্ডেন ১৬ একর, রিফাত ব্যাগ ২৫ শতক, পটকা মৌজায় ট্রেড ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন ৭.৬৪ একর, কেওয়া মৌজার মিতা টেক্সটাইল ২.২০ একর, মেঘনা কম্পোজিট ৪০ শতাংশ, জোবায়ের স্পিনিং এক একর, ওমেগা সুয়েটার এক একর, সোলার সিরামিকস ৯০ শতাংশ, ইকো কটন ৪.৮৬ একর, ভাওয়াল ইন্ডাস্ট্রিজ দুই একর, অনটেক লিমিটেড ৪.৯৪ একর, হাউআর ইউ টেক্সটাইল এক একর, অরণ্যকুটির ২.২২ একর, উইস্টেরিয়া টেক্সটাইল ৫.৩৩ একর, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল দুই একর, এপেক্স নিট কম্পোজিট ১১.৬২ একর, গ্রেটওয়াল সিরামিকস ৭.৩৮ একর, টেপিরবাড়ি মৌজায় ডিবিএল গ্রুপ ছয় একর, তেলিহাটি মৌজায় কুঞ্জবিথি এক একর, আলিফ অটো ব্রিকস ৭০ শতাংশ, টেপিরবাড়ী মৌজায় চায়না-বাংলা প্যাকেজিং এক একর, প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস ৭৬ শতাংশ, এইচএস অ্যাগ্রো দেড় একর, রেক্স অটো ব্রিকস এক একর ৭০ শতাংশ, টেংরা মৌজায় শিশুপল্লী প্লাস সাড়ে ১২ একর, মম পোলট্রি ৭০ শতাংশ ও ওয়ারবিট স্টিল বিল্ডিং দুই একর বনের জমি দখল করেছে। পেলাইদ মৌজায় সিসিডিভি পাঁচ একর, সাইটালিয়া জামান পোলট্রি দুই একর, মাওনা মৌজার মনো ফিড ২.২৫ একর, এইচ পাওয়ার লিমিটেড ৩৩ শতাংশ, হোম ডিজাইন ১.২২ একর ছাড়াও বিবিএস কেবল, দি সোয়েটার, ইকো কটন মিলস, সিটিসেল লিমিটেডও বনের জমি দখল করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর