বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংসদে বাজেট নিয়ে ফরিদা ইয়াসমিনের প্রস্তাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকারদলীয় এমপি ফরিদা ইয়াসমিন বলেছেন, সব বাজেটই চ্যালেঞ্জের। তবে এবার চ্যালেঞ্জ একটু বেশি। কারণ, বিশ্ব এখন উথালপাথাল, যুদ্ধের কারণে অস্থির অর্থনীতি। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। তবে বাজেটের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হচ্ছে প্রণীত বাজেটে কোনো উচ্চাভিলাষ নেই। তিনি বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা দেন। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল বিকালে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়।

ফরিদা ইয়াসমিন তাঁর প্রস্তাবনায় বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিকদের স্মার্ট করতে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো। টেলিফোনের সিম কার্ডের ওপর কর বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহার। যারা কর দেন শুধু তাদের ওপর নানামুখী চাপ প্রয়োগ না করে করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ। সংসদ সদস্যদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া। এ ক্ষেত্রে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে শুল্ক ধার্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। হয়তো মহৎ উদ্দেশ্য থেকে এটা করা হয়েছে। যেহেতু উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়ররা সরকার থেকে বরাদ্দকৃত গাড়ি পান, অনেক সংসদ সদস্যের গাড়ি কেনার সামর্থ্য নেই কিন্তু তাদের এলাকায় ঘুরে বেড়াতে হয়। গাড়ি তাদের বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন। সরকার থেকে গাড়ি বরাদ্দ করলে তাঁর গাড়ি আমদানির প্রয়োজন নেই। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমে বাণিজ্য ও রেমিট্যান্স বাড়ানোর তাগিদ দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। এ ছাড়া রাজস্ব বাড়ানোর জন্য বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্টকে ঢেলে সাজানো, প্রয়োজনে থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার মডেল অনুসরণ করা; কালো টাকা সাদা করার বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করা যে কোন কোন খাতে এ টাকা ব্যয় করা যাবে তা নির্দিষ্ট করার অনুরোধ জানান তিনি। উদাহরণ হিসেবে শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরেন। এ ছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলো থেকে ঠিকভাবে কর আদায়ের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো লাগামহীনভাবে রোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করলেও কর দেয় না, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, কভিড আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা দেয়। উন্নত বিশ্ব আমেরিকা-ইউেরোপ যখন কভিড সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল, তখন আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু সামাল দিয়েছেন তাঁর নিজস্ব অর্থনীতি ও রাজনৈতিক দর্শন থেকে। তিনি কভিডের অর্থনীতি সামলেছেন, এখন সমৃদ্ধি ধরে রেখে যুদ্ধের অর্থনীতি সামলাচ্ছেন। অথচ ১৯৮১ সালে যেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন, সেদিন ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিমানবন্দর থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকন্যাকে একনজর দেখার জন্য। মুহুর্মুহু স্লোগান উঠেছিল ‘শেখ হাসিনা এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা ছিলেন নিঃস্ব, অসহায়। তাঁর পৈতৃক বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি স্বৈরশাসক জিয়া। শেখ হাসিনা বাড়ির বাইরে বসে আহাজারি করেছেন। আজকের বঙ্গবন্ধুকন্যা শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক নন, তিনি সারা বিশ্বের নেতা। তিনি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে দেশকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করেছেন। দেশে ফিরে তিনি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ছুটে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। তিনি এখন গৃহহীন ও ভূমিহীনদের গৃহ দিচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর