রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম চামড়ার বাজারে পুরনো আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

করোনা মহামারির আগে টানা কয়েক  বছর লোকসানের পর কোনোভাবেই চট্টগ্রামের চামড়ার বাজার বড় হচ্ছে না। এর সঙ্গে পুঁজি ও ঋণ সংকট এবং ট্যানারি মালিকরা নির্ধারিত দামে চামড়া না কেনায় চামড়া সংগ্রহে অনাগ্রহী পুরনো আড়তদাররা। গত তিন বছর ধরে সাড়ে ৩ লাখ পিসের মতো চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। অথচ চট্টগ্রাম জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা এর দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে সরবরাহ বেশি থাকায় প্রতিবছর নামমাত্র দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হন কোরবানিদাতারা।

এ প্রসঙ্গে বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন বলেন, ‘আড়তদাররা নানা সংকটে আছে। ধারদেনা করে ব্যবসা করতে হয়। এর পরও ইতোমধ্যে গুদাম পরিষ্কার, লবণ কেনাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছেন। যার যার টার্গেট অনুযায়ী অর্থ সংগ্রহ করে চামড়া কেনার প্রস্তুতি নিয়েছেন।’

আড়তদাররা জানান, ২০১৮ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে সাড়ে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ পিস পর্যন্ত চামড়া সংগ্রহ করা হতো। এরপর থেকে চট্টগ্রামে চামড়া সংগ্রহের হার কমে যায়। ২০১৯ সালে পূর্ববর্তী বছরের সমান চামড়া সংগ্রহ করে বিপাকে পড়েন আড়তদাররা। সেবার চাহিদার অতিরিক্ত চামড়া বিক্রি করতে না পেলে রাস্তায় ফেলে দিতে হয়। এরপর ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারির ধাক্কায় চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আরও কমে যায়।

পুরনো এই আতঙ্কে আড়তদাররা গত দুই বছর যথাক্রমে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ২৫০ পিস ও ৩ লাখ ১৯ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ করছেন। এবারের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৩ লাখ পিস। অথচ প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী চলতি মৌসুমে চট্টগ্রাম জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৮ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম চামড়া আড়তদার সমিতির ১১২ জন সদস্য থাকলেও বর্তমানে ৩৫ জনের মতো আড়তদার কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেন। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানের মুখে পড়ে বর্তমানে তারা অর্থনৈতিক সংকটে আছেন। এর সঙ্গে ট্যানারি মালিকরা সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া না কেনায় আড়তদাররা লোকসানের আশঙ্কায় থাকেন। এ কারণে চামড়া সংগ্রহে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন পুরনো আড়তদাররা।

দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা চামড়া ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মো. তারেক বলেন, ‘লোকসান গুনতে গুনতে এখন বেশির ভাগ আড়তদার পুঁজি সংকটে আছেন। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ধারে টাকা নিয়ে চামড়া কেনেন অনেকে। ওই চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে দেখা যায় লোকসান হচ্ছে। অথবা লাভ হলেও খুব অল্প। আবার ব্যাংকের পক্ষ থেকেও আড়তদারদের তেমন ঋণ সুবিধা দেওয়া হয় না। ফলে অনেকেই এখন আর লোকসানের ঝুঁকি নিতে চান না।’

 

সর্বশেষ খবর