শিরোনাম
রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক

ধ্বংস হচ্ছে কৃষিজমি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে ফসলি জমিতে খনন করা হচ্ছে পুকুর। গত পাঁচ বছরে প্রায় ২২ হাজার হেক্টর আবাদি জমি গেছে পুকুরের পেটে। প্রায় এক যুগ আগে রাজশাহীতে পুকুর খননের হিড়িক পড়ে। জেলার পবা, মোহনপুর, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, চারঘাট, বাঘা ও বাগমারা উপজেলার মাঠে মাঠে পুকুর কাটা হয় তিন ফসলি জমিতে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যায় না। তাই অবৈধভাবে পুকুর খনন ঠেকাতে মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়। কিন্তু পুকুর খনন বন্ধ হচ্ছে না। রাজশাহীতে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে অবাধে পুকুর খননের হিড়িক চলছে। ধ্বংস হচ্ছে শত শত একর কৃষি জমি। স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিনরাত চলছে পুকুর খননের মহাযজ্ঞ। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তিন ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খনন। ফলে দিন দিন কমছে ফসলি কৃষি জমি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় রাতদিন সমান তালে চলছে এ কাজ। শ্রেণি পরিবর্তন না করেই মাঠের পর মাঠ পুকুর খনন করছেন প্রভাবশালীরা। এতে সহায়তা দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। এ নিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। তবে তা মানতে নারাজ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার হুদির বিলে (খননকারী শিবেন), গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে সাজুড়িয়ার যশোর বিলে (খননকারী কার্তিক), হামিরকুৎসা ইউনিয়নে খাপুর বিলে, মাড়িয়া ইউনিয়নের মহিষের বিল এবং ঝিকরা ও গনিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় কৃষকের জমি দখল করে প্রভাবশালীরা অন্তত ৩০টি পুকুর খনন করছে। পুঠিয়ায় শিলমাড়িয়ার ১৩টি স্থানে পুকুর খনন চলছে। অর্ধশতাধিক খননযন্ত্র কাজ করছে রাতদিন। পুকুর খননকারীর তালিকায় আছেন স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা ও ব্যবসায়ীরা। থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে পুকুর খনন চলছে। তানোর উপজেলায় পুকুর খনন চলছে রাতের আঁধারে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও পুকুর খনন বন্ধ হয়নি। স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়ার পরও তা বাস্তবায়ন হয়নি। একই কর্মযজ্ঞ চোখে পড়ে দুর্গাপুরের বিলগুলোতে। পুকুর খননের মহোৎসব চলছে দুর্গাপুরজুড়েই। উপজেলার তেবিলায় গিয়ে দেখা গেল বিলের চারদিক ঘিরে চলছে পুকুর খনন।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন সবসময় অভিযান চালায়। কৃষি জমি যাতে নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর