শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পশুর হাট এলাকার বাসিন্দারা

হাসান ইমন

দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পশুর হাট এলাকার বাসিন্দারা

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গত তিন দিনে ৪৪ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। এর মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্যরে পাশাপাশি পশুর হাটের বর্জ্যও রয়েছে। কিন্তু এ বিপুল পরিমাণ বর্জ্য অপসারণ করলেও দুর্গন্ধমুক্ত হয়নি দুই সিটির অনেক এলাকা। বিশেষ করে যেসব এলাকায় পশুর হাট বসেছিল, সে এলাকায় বিশ্রী দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। নাক চেপে চলাচল করা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সড়কগুলো বর্জ্যমুক্ত হলেও ভিতরের সড়কগুলোর বর্জ্য বৃষ্টির পানিতে গোবর ও রক্ত মিশে খানাখন্দে জমে কাদাপানির সৃষ্টি করেছে। দুর্গন্ধে একাকার সেসব এলাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মেরাদিয়া হাটটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইজারা দিয়েছিল। ঈদের দিন বিকালে হাটটির বর্জ্য অপসারণ কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। পরে মঙ্গল ও বুধবার সকালে হাটটি পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়নি। ফলে যেসব সড়কে পশু উঠেছিল সবকটিতে খড়মিশ্রিত গোবর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কোথাও আবার বাসাবাড়ির আঙিনায় গোবর উঠিয়ে রাখতে দেখা যায়। এদিকে বৃষ্টিতে সড়কে জমে থাকা কাদাপানিতে রক্ত ও গোবর মিশে বিশ্রী দুর্গন্ধ তৈরি করেছে। এতে পথচারীদের চলাচল এবং পাশের আবাসিক ভবনের নিচতলায় ও দুই তলায় বাসিন্দাদের বসবাস দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাকে রুমাল চেপে হেঁটে চলাচলও কষ্টকর। কয়েকটি বাসার দারোয়ান ও দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা বলেন, সিটি করপোরেশন হাটটি পরিষ্কার করতে দেরি করেছে। ঈদের দিন পরিষ্কার করলে বিশ্রী দুর্গন্ধ তৈরি হতো না। এ ছাড়া হাটটির বিভিন্ন স্থানে খড়মিশ্রিত গোবরের স্তূপ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে জায়গা উঁচুনিচু হওয়ায় গাড়িতে সব ময়লা ওঠেনি। আর গত কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় খানাখন্দে পানি আটকে রয়েছে। এতে কোরবানি করা পশুর গোবর ও রক্ত পানির সঙ্গে মিশে দুর্গন্ধ তৈরি হয়েছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ জনবসতি এলাকায় হাট বসায় সিটি করপোরশন। মানুষের যে দুর্ভোগ হয় তা তারা উপলব্ধি করতে পারে না। আর ময়লা সিটি করপোরেশন তো নামেই পরিষ্কার করেছে। বেশির ভাগ বর্জ্য অপসারণ হলেও পশুর রক্ত যথাযথভাবে অপসারণ বা পানি দিয়ে পরিষ্কার না করায় এমন দুর্গন্ধ হচ্ছে। এ দৃশ্য শুধু মেরাদিয়া হাটে নয়, কমলাপুর, আমুলিয়া, সারুলিয়া, তেজগাঁও এবং সাঈদনগর পশুর হাট এলাকায় দেখা যায়।

জানা যায়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঈদের দিন থেকে বুধবার পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৬৩ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি প্রথম দিনে ২ হাজার ১০১ ট্রিপে প্রায় ১০ হাজার ৩৭৪ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। ঈদের দ্বিতীয় দিনে ৯২৭ ট্রিপে মোট ৪ হাজার ৯ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়। বুধবার পর্যন্ত সর্বমোট ৪ হাজার ১৭৭ ট্রিপে মোট ২০ হাজার ১০৫ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করে ডিএনসিসি। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রথম দিন ২ হাজার ৫০৮টি ট্রিপের মাধ্যমে ১১ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করে। দ্বিতীয় দিন ১ হাজার ৯৭৪টি ট্রিপের মাধ্যমে ৯ হাজার ৩৯ মেট্রিক টন এবং তৃতীয় দিন ৮৩৭টি ট্রিপের মাধ্যমে ৩ হাজার ২৩৪ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করে। সর্বমোট ২৩ হাজার ৯৫৮ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করে ডিএসসিসি।

সর্বশেষ খবর