শ্রদ্ধা, গান, কবিতা আর আলোচনায় একুশে পদকপ্রাপ্ত তারুণ্যের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল সকাল ১০টায় কবির গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলার মিঠাখালীতে রুদ্র স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে শোভাযাত্রা সহকারে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বাড়িতে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সুমেল সারাফাত। বক্তব্য রাখেন মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার ম ল, রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টাম লীর সভাপতি মাহামুদ হাসান ছোটমনি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা শাখার সভাপতি নূর আলম শেখ, চালনা বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, রামপাল সরকারি কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম, রুদ্র স্মৃতি সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটো প্রমুখ।
মাত্র ৩৫ বছরের জীবনে রুদ্র রচনা করেন সাতটি কাব্যগ্রন্থ ‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯), ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১), ‘মানুষের মানচিত্র’(১৯৮৪), ‘ছোবল’ (১৯৮৭), ‘গল্প’ (১৯৮৭) ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’ (১৯৮৮) এবং ‘মৌলিক মুখোশ’ (১৯৯০)।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু গল্প লিখেছেন।তার রচিত ও সুরারোপিত ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’- গানটি দুই বাংলায় অসম্ভব জনপ্রিয়। ১৯৮৭ সালে তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মোংলায় বসে তিনি এ গানটি রচনা ও সুরারোপ করেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দুবার ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন দ্রোহের এ কবি। বিগত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রুদ্র সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
