সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঠুনকো ঘটনায় একের পর এক খুন

♦ চট্টগ্রামে কিশোরদের হাত রক্তে রঞ্জিত ♦ ছয় বছরে খুন অর্ধশতাধিক

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ঠুনকো ঘটনায় একের পর এক খুন

চট্টগ্রামে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে কিশোর গ্যাং। ঠুনকো ঘটনায় তাদের হাতে একের পর এক খুন হচ্ছে। গত ছয় বছরে চট্টগ্রামে এসব গ্যাংয়ের হাতে খুন হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। যার মধ্যে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনেই খুন হয়েছেন চারজন। কিশোর গ্যাংয়ের এমন আস্ফালনে স্তম্ভিত চট্টগ্রামের প্রশাসন। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কাজী তারেক আজিজ বলেন, ‘কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে আনতে সিএমপি প্রতিরোধমূলক নানান পদক্ষেপ নিয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে।’

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘জেলায় কিশোর গ্যাং ও তাদের হোতাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকা ধরেই অভিযান চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা ও নগরে সক্রিয় কিশোর গ্যাং রয়েছে কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক। এ গ্রুপগুলোতে একেকটিতে সক্রিয় রয়েছে ১০ থেকে ২৫ জন সদস্য। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রয়েছে কয়েক হাজার। তারা মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, শ্লীলতাহানিসহ নানান অপকর্মে জড়িত। এমনকি ঠুনকো ঘটনায় একে অন্যকে করছে খুন। গত ছয় বছরে চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হয়েছেন অর্ধশতাধিক। যার মধ্যে চলতি মাসের প্রথম ৯ দিনেই খুন হয়েছেন চারজন। অভিযোগ রয়েছে- এসব চক্রের নেতাদের বেশিরভাগ সদস্যই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত অথবা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাইলেও রাজনৈতিক নেতাদের বাধার মুখে হটতে হয় পেছনে।

৯ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বঙ্গবন্ধু টানেলের পতেঙ্গা থানা অংশের প্রবেশমুখে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় খুন হন মনিরুজ্জামান রাফি নামে এক যুবক। ৩ জুন নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে বিরোধের জের ধরে খুন হন মো. আজিম নামে এক কিশোর। একই দিন রাতে নেশার টাকা না দেওয়ায় ছেলে ওমর ফারুকের হাতে খুন হন মা রিনা আকতার। ১ জুন বোয়ালখালী উপজেলায় তুচ্ছ বিষয়ে খুন হন আরিফ হোসেন নামে এক কিশোর। ৯ মে নগরীর ইপিজেড থানা এলাকার আকমল আলী রোডে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হন মেহেদী হাসান নামে এক কিশোর। ৯ এপ্রিল নগরীর আকবর শাহ থানাধীন পশ্চিম ফিরোজ শাহ হাউজিং এলাকায় ছেলেকে কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে এসে খুন হন দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলী। ২৭ এপ্রিল পটিয়া উপজেলা সদরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে খুন হন রাজু হোসেন রাসেল নামে এক যুবক।  ১৩ মার্চ নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হন রিয়াদ নামে এক রেস্টুরেন্ট কর্মী। ১৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় কথাকাটাকাটির জের ধরে খুন হন সাজ্জাদ হোসেন নামে এক কিশোর।

 

সর্বশেষ খবর