শিরোনাম
সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

অবশেষে তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাচ্ছে বাংলাদেশ

আইএমএফের ঋণ

মানিক মুনতাসির

অবশেষে তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাচ্ছে বাংলাদেশ

অবশেষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আজ ২৪ জুন ওয়াশিংটনে সদর দফতরে সংস্থাটির বোর্ড সভার সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সূচিতে বাংলাদেশের ঋণের তৃতীয় কিস্তির ইস্যুটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এই ঋণ প্রকল্পের বিপরীতে সংস্থাটির দেওয়া প্রায় বেশির ভাগ শর্তই পূরণ করতে সক্ষম বাংলাদেশ। বোর্ড সভার এই তথ্য আইএমএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় কিস্তিতে বাংলাদেশকে ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে আইএমএফ। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রিজার্ভের সঙ্গে এক বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা যোগ হলে সেটা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য বেশ ইতিবাচক সংকেত দেবে বলে মনে করেন অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, আইএমএফের পর্ষদে অনুমোদিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের তৃতীয় কিস্তি অর্থ পাওয়ার পথ খুলবে এবং জুনের মধ্যেই তা পাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে বৈঠকের পরদিন ২৫ জুনেও সেটা পাওয়া যেতে পারে। আবার জুন মাসের শেষদিন পর্যন্তও সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। তবে সাধারণত বৈঠকের অনুমোদনের পর অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে আর দেরি করা হয় না।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক কারণে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট তৈরি হলে তা সমাধানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এই ঋণ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় কিস্তির পরিমাণ আগের দুই কিস্তির সম্মিলিত অঙ্কের চেয়েও ১১৫ কোটি ডলার বেশি ।

অন্যদিকে এই ঋণের বিপরীতে আইএমএফের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশকে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে হবে ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার।

অবশ্য অন্য শর্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি সন্তোষজনক হওয়ায় এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলার নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে ১৯ জুন পর্যন্ত নিট রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে ২৬ মে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তাঁর কার্যালয়ে আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান বলে গেছেন, বাংলাদেশ সঠিক পথেই আছে। জুনের মধ্যেই তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়া যাবে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের সংকটটা অনেক গভীর। কেননা এটা বেশ পুরনো সংকট। অনেকদিন ধরে অর্থনীতির এই সংকট আমলে নেওয়া হচ্ছিল না। স্বীকারও করা হচ্ছিল না। ফলে সংকটটা গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। এই সংকট উত্তরণে আইএমএফের ঋণের অর্থের চেয়ে আমাদের আর্থিক খাতের সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া বেশি জরুরি।’

এদিকে আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। গতকাল আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিদায়ী বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফ নতুন করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আয় বাড়ানো, সুদহারের বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে। জলবায়ু ও দুর্যোগ মোকাবিলার পরামর্শ অনুসরণ করে চলতি বছরই কাজ শুরু করবে সরকার।’

সর্বশেষ খবর