বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল এসএসএফের মেসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন - আইএসপিআর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কাউকে আক্রমণ করবে না, তবে আক্রান্ত হলে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। গতকাল এসএসএফের (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনোভাবে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাব না। কিন্তু আক্রান্ত হলে যেন নিজেদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি, সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। সেই লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

সরকার প্রধান বলেন, সরকারে আসার পর প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে আমরা সেভাবেই গড়ে তুলছি। সশস্ত্র বাহিনী যাতে উৎকর্ষতা অর্জন করতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছি। সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এসএসএফ সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দৃঢ়তা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ নিজের ভিতরে এসব না থাকলে সফলতা অর্জন করা যাবে না। এসএসএফে এসব বাহিনীর প্রতিনিধি রয়েছে, যা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ প্রতিহত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। নিজে যেন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে না হয়ে পড়েন সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)-এর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে কিন্তু আমাকে আর গুলি বোমা লাগবে না, এমনিতেই শেষ হয়ে যাব। কাজেই এরাই আমার প্রাণ শক্তি। এটুকু মনে রাখতে হবে। আমি যখন সরকারে ছিলাম না, তখন এই দেশের মানুষ এবং দলীয় লোক, তারাই আমার পাশে ছিল। তিনি এই সময় এক দরিদ্র রিকশাওয়ালার উপার্জনের সামান্য জমানো অর্থে তাঁদের দুই বোনের ঢাকায় যেহেতু কোনো বাড়ি নেই এবং ধানমন্ডির বাড়িটিও তারা দান করেছেন সেজন্য তাঁর নামে একটি জমি কেনার এবং তাঁর কাছে হস্তান্তর করতে চাওয়ার একটি ঘটনা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকবার তাঁকে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে শোনে নাই। সেই রিকশাওয়ালার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সেই দলিলটা আমার কাছে হস্তান্তর করতে চাইলে আমি নিজে সেখানে গিয়ে তাদের বাড়ি তৈরি করে তার স্ত্রীর হাতে দলিল দিয়ে বলেছি, মনে করবেন এটা আমারই বাড়ি, এখন আপনারা থাকবেন। অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর খালেদা জিয়ার জন্য দুটি বাড়ি, গাড়ি, ক্যাশ টাকা অনেক কিছু রেখে যান। সরকার প্রধান বলেন, এই সাধারণ মানুষগুলোর জন্যই আমার রাজনীতি, এদের ভাগ্যের পরিবর্তন ও জীবনমান উন্নত করাই আমার লক্ষ্য। তাই এসব মানুষগুলোর কাছ থেকে আমি বিচ্ছিন্ন হতে পারি না। কারণ, এরাই আমার চলার সব শক্তি জোগায়। এটা সবাইকে মনে রাখার জন্য আমি অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে হয়তো একটা কাজ দিয়ে পাঠিয়েছেন ততক্ষণ আমি বেঁচে থাকব। কিন্তু, আমার সঙ্গে যারা কাজ করে এবং যারা আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত তাদের জন্য আমি চিন্তায় থাকি। কারণ, যতবার আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে প্রতিবারই আমার কিছু না কিছু নেতা-কর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। তারা ‘মানববর্ম’ রচনা করে আমাকে গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা করেছেন। কাজেই এসএসএফ যেহেতু আমার সবচেয়ে কাছে থাকে, আমি সবসময় তাদেরকে নিয়ে চিন্তিত থাকি। আমি যখন নামাজ পড়ি তখন পরিবারের সদস্য, দেশবাসী এবং আমার আশপাশে যারা থাকেন এবং নিরাপত্তায় এসএসএফসহ যারা নিয়োজিত থাকেন তাদের জন্যও দোয়া করি। শেখ হাসিনা বলেন, আমি এসএসএফের সবাইকে বলব যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা প্রদানে সবসময় পেশাগত দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি প্রত্যেকেই দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুণাবলি নিয়েই নিজেদেরকে তৈরি করে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এসএসএফ-এর সব সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া আশীর্বাদ জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও পেশাপত মান বিচারে এই বাহিনী হয়ে উঠুক একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনী।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর