শিরোনাম
শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বরেন্দ্রর প্রকল্পে বড় অনিয়ম

চলতি বছর বিএমডিএ-র ১৩ প্রকল্পের শত কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করছে কৃষি ও পরিবেশ অডিট কার্যালয়ের আট সদস্যের দুই টিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) উত্তরের কৃষিভান্ডার সমৃদ্ধ করতে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতি বছর অডিট আপত্তি জমছে। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটির ১৩ প্রকল্পের শত কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করছে কৃষি ও পরিবেশ অডিট কার্যালয়ের আট সদস্যের দুই টিম।বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) আবদুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে ৪ হাজারের মতো অডিট আপত্তি ছিল। যার মধ্যে এখন মাত্র ১০০টির কিছু বেশি জমা আছে। আপত্তি হলেই যে দায়ী তা বলা যাবে না। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ওরা আপত্তি জানায়। পরে আবার ওদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। ওরা প্রাথমিকভাবে আপত্তি জানায়, আমরা হয়তো প্রাথমিকভাবে সার্কুলারের কাগজপত্র দিতে পারি না। কিন্তু পরে তা দেওয়ার পর আর আপত্তির সুযোগ থাকে না।’ তিনি জানান, বিএমডিএতে আগে বার্ষিক অডিট করা না হলেও এখন অডিট ফার্ম দিয়ে অডিট রিপোর্ট করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর শতাধিক কোটি টাকার ১৩টি প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে নতুন করে তদন্তে নেমেছে কৃষি ও পরিবেশ অডিট অধিদফতরের আট সদস্যের দুটি টিম। একটির প্রধান উপপরিচালক মো. নেয়ামত উল্লাহ এবং অন্যটির প্রধান অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. বশির উদ্দিন। টিম দুটি প্রকল্পগুলোর তিন মাসের (ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল) বিভিন্ন বিষয় যাচাই করে দেখছে। তবে এ তদন্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি সংশ্লিষ্টরা। তদন্ত টিমের এক সদস্য জানান, তদন্ত শেষে আর্থিক অনিয়মের প্রতিবেদন বিএমডিএকে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে এর কপি বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) বরাবর পাঠানো হবে। সেখানে যাচাইবাছাই শেষে প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। সূত্রমতে, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর কার্যালয় থেকে দেওয়া প্রজ্ঞাপন অনুসারে নিরীক্ষা আপত্তির ক্ষেত্রে দায়ী থাকবেন অর্থ ব্যয়কারী কর্মকর্তাসহ প্রকল্প পরিচালক। অবশ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রজ্ঞাপনে অডিট আপত্তিগুলোর জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে। তবে বছর পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে বিএমডিএকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

চার অর্থবছরে ৩৫০ কোটি টাকার অডিট আপত্তি : ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২-এ চার অর্থবছরে সরকারি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বিএমডিএ’র বিরুদ্ধে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা অডিট আপত্তির কথা উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম ত্রুটি হলো আইনের বাধ্যবাধকতা থাকার পরও বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয় কর্তৃপক্ষ বার্ষিক অডিট (আয়ব্যয়ের হিসাব) প্রতিবেদন প্রস্তুত করে না। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটির আয়ব্যয়ের প্রকৃত চিত্রও মানুষের সামনে আসে না। এভাবে প্রকল্পগুলো থেকে নানা কায়দায় অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এসব নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ৩ শতাধিক অনিয়মের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ : রাষ্ট্রপতির কাছে নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছেন, সরকারের নির্ধারিত পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ এবং বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুতের জন্য ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের জারি করা পদ্ধতিতে আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুতের লক্ষ্যে হিসাব বিবরণী সংরক্ষণ বিধি ও স্ট্যান্ডার্ডস ও গাইডলাইন অনুসরণ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর