শিরোনাম
রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
ঢাকার বাইরেও বেহাল হাসপাতাল

অচল যন্ত্র দিয়েই চলছে জেনারেল হাসপাতাল

নষ্ট পড়ে আছে এমআরআই মেশিন ও দুটি আইসিইউ বেড

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

অচল যন্ত্র দিয়েই চলছে জেনারেল হাসপাতাল

চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ‘২৫০ শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল।’ কিন্তু এই হাসপাতালটি চলছে মেরামতযোগ্য অচল চিকিৎসা উপকরণ দিয়েই। হাসপাতালের বিদ্যমান যন্ত্রপাতির মধ্যে ৩০টিই মেরামতযোগ্য অবস্থায় অচল হয়ে পড়ে আছে। ফলে রোগীরা কখনো সেবা পাচ্ছে, কখনো সেবা বঞ্চিত হয়ে অন্যত্র চলে যেতে হচ্ছে। গরিব-অসহায় রোগীদের পোহাতে হয় অন্তহীন ভোগান্তি। জানা যায়, গত মাসে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে অচল পড়ে আছে কিন্তু মেরামত করলে সচল হবে, এমন যন্ত্রপাতির একটি তালিকা করা হয়। বর্তমানে ৩০টি মেশিন অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এর মধ্যে আছে- এমআরআই মেশিন একটি, এক্সরে মেশিন দুটি (একটি পোর্টেবল), কালার ডপলার ২-ডি মেশিন দুটি, এনেসথেশিয়া মেশিন চারটি, ল্যাপারোসকপি মেশিন একটি, ল্যাপারোসকপি মনিটর একটি, ডায়াথেরামি মেশিন একটি, স্পোর্ট লাইট দুটি, অটোক্ল্যাব মেশিন দুটি, ডেন্টাল ইউনিট দুটি, আইসিইউ বেড দুটি, ভেন্টিলেটর মেশিন ছয়টি, রেফ্রিজারেটর একটি এবং ইসিজি মেশিন তিনটি।

পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, কোমরের ব্যথার জন্য চিকিৎসকের কাছে গেলে আমাকে এমআরআই করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের এই মেশিনটি নাকি নষ্ট। অথচ প্রাইভেট ল্যাবে এমন দামি পরীক্ষা করার মতো আর্থিক সামর্থ্য আমার নেই। এখন কী করব তাও বুঝতে পারছি না।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অজয় দাশ বলেন, বিদ্যমান যন্ত্রপাতি দিয়েই চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কোনো ওয়ার্ড থেকে এখনো যন্ত্রের সংকটের কথা উল্লেখ করে কিছু জানায়নি। চিকিৎসা উপকরণের সংকট তো আছে। তবুও সব রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছি। আসলে এমন একটি হাসপাতালের জন্য নিয়মিত তত্ত্বাবধায়ক দরকার। আমরা চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মানুষ, প্রশাসনিক কাজগুলোর জন্য পৃথক মানুষ দরকার। তবুও সাধ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়েই চেষ্টা করছি।

জানা যায়, ১৯০১ সালে কেবল বহির্বিভাগ নিয়ে চালু হয় জেনারেল হাসপাতাল। ১৯৮৬ সালে নতুন ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ৮০ শয্যার হাসপাতালের যাত্রা শুরু। ১৯৯৬ সালে ১৫০ শয্যায় উন্নীতের জন্য নতুন ভবন নির্মিত হলেও জনবল কাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় তা কার্যকর হয়নি। ২০০৩ সালে আগের জনবল দিয়ে ১৫০ শয্যায় উন্নীত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি ১৫০ শয্যার জনবল ঠিক রেখেই ২৫০ শয্যার অনুমোদন দেয় সরকার। বর্তমানেও ১৫০ শয্যার জনবল ও ওষুধ দিয়েই চলছে ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি। বর্তমানে হাসপাতালে শিশু, মেডিসিন, গাইনি, সার্জারি, অর্থোপেডিক, ফিজিক্যাল মেডিসিন, নাক-কান-গলা, চর্ম ও যৌন, দন্ত, চক্ষু বিভাগ চালু আছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময় এ হাসপাতালকে ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল ঘোষণার পর স্বাস্থ্যসেবায় আইসিইউ ডেড, সেন্ট্রাল অক্সিজেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডের সংস্কারসহ নতুন নতুন অনেক অনুষঙ্গ সংযোজন হয়। কিন্তু সে হিসাবে রোগীরা আশানুরূপ চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর