শিরোনাম
রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সেই শহীদ পরিবারের অমানবিক জীবনযাপন

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের শহীদ পরিবারের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। হামলার পর ভুক্তভোগী পরিবারটি এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। হামলার সময় অর্ধকোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় মামলা দিতে গেলেও পুলিশ তা নিচ্ছে না। উল্টো প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুরো পরিবারটি বর্তমানে অমানবিক জীবনযাপনের পাশাপাশি নানামুখী শঙ্কার মধ্যে দিন পার করছে।

গতকাল যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা তাদের এ করুণ অবস্থার কথা জানান। একই সঙ্গে ন্যায়বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আসাদুজ্জামানের বড় ছেলে আরমান হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরমান হোসেন অভিযোগ করেন, হামিদপুর গ্রামের শহীদ শহীদ উদ্দিনের ছেলে আসাদুজ্জামানের বসতবাড়িতে গত ২৭ জুন দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন দুই শতাধিক লোক নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তার ছেলে পিয়াস, সন্ত্রাসী শেখহাটির মিল্টন, বাঘারপাড়ার যাদবপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে মাইক্রো, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে দুই শতাধিক সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একটি এক্সকেভেটর ও ৭টি ট্রাক্টর নিয়ে আকস্মিকভাবে শহীদ পরিবারের বাড়িতে ঢুকে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে লন্ডভন্ড ও লুটতরাজ চালায়। তারা অস্ত্রের মুখে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে। প্রথমে তার বৃদ্ধ বাবাকে মারপিট করে মোবাইল সেট কেড়ে নেয়। এরপর সন্ত্রাসীরা তাকে ও তার ছোট ভাই জাফরীকে মারপিট করে মোবাইল সেট কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। এরপর তার মা রুবিনা জামান, স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সুমি আক্তারকে হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে সন্ত্রাসীরা। এরপর সন্ত্রাসীরা একে একে ঘরে ঢুকে হকিস্টিক দিয়ে মালামাল ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায়। সন্ত্রাসীরা ওয়্যারড্রোব ভেঙে জমি বিক্রির নগদ ১০ লাখ টাকা, প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ৩০ ভরি স্বর্ণের গহনা, ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ৩টি গরু, অন্যান্য গৃহস্থালি পণ্যসহ প্রায় ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল লুট করে। তাছাড়া দুটি ছাদের পাকা বিল্ডিং গুঁড়িয়ে দিয়ে ১ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতিসাধন করে। সন্ত্রাসীরা একদিকে লুটপাট, অন্যদিকে একটি এক্সকেভেটর দিয়ে ৮ রুমের ছাদের দুটি বসতঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা ৬টি ট্রাক্টরের ট্রলিতে করে লুটকৃত মালামাল নিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে সন্ত্রাসীদের একটি এক্সকেভেটর ও একটি ট্রাক্টরের ট্রলি জব্দ করে এবং তিনজনকে আটক করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সন্ত্রাসীরা আমাদের অস্ত্রের মুখে যেভাবে জিম্মি করে রেখেছিল তাতে আমরা বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে অপহরণ করতে ব্যর্থ হয়ে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। তিনি আরও জানান, ১৯৯৩ সালে শিল্প ব্যাংক থেকে আমার পিতার নামে ক্রয়কৃত নিলামের সম্পত্তিতে আমি ও আমার পরিবার বসবাস করে আসছি। ওই সম্পত্তির সব বৈধ কাগজপত্র আমাদের আছে। শহিদুল ইসলাম মিলন ওই সম্পত্তি তার বেয়াই নুরুল ইসলামের দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে আমার নিলামে কেনা সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা করে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান, তার বড় ছেলে আরমান হোসেন, মেজো ছেলে আফরুজ্জামান, ভাতিজা হাবিবুল্লাহ, বেয়াই শুকর আলী, ইদু মেম্বার, যুবলীগ নেতা হাসানুজ্জামান প্রমুখ।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর