মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
হোলি আর্টিজান হামলার আট বছর

ফুলেল শ্রদ্ধায় নিহতদের স্মরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অশ্রু ও ফুলেল শ্রদ্ধায় রাজধানীর হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় নিহতদের স্মরণ করলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিদেশি কূটনীতিক ও স্বজনরা। প্রিয়জনের স্মরণে এসে চোখের জলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তাদের অনেকে। অন্যদিকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, অনলাইনে তৎপরতা মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশে আর কখনোই জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। এ ছাড়া হোলি আর্টিজানের পর জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ দমনে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় দেশি-বিদেশি ২০ জন নাগরিকসহ দুজন পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যার আট বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল এই শ্রদ্ধা জানানো হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, ন্যক্কারজনক এই জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ইতালির রাষ্ট্রদূতরা। ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরিসহ অন্য কূটনীতিকরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তারা ডিএমপির কূটনৈতিক বিভাগে গিয়েও হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়াও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

গুলশানের দীপ্ত শপথ ভাস্কর্যে হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে এখন আর সেভাবে জঙ্গি তৎপরতার তথ্য নেই। জঙ্গিবাদ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে এখন নিরাপদ একটি দেশ।

জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম আদালত থেকে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ বলেন, সার্বক্ষণিক জঙ্গিদের বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জঙ্গিরা এক সময় নানা প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করেছে। জঙ্গিরা ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করেছে এক সময়। আমরা এসব বিষয়েও নজরদারি করছি। ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডেও নজরদারি রয়েছে। আমরা মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই এই দেশে আর কখনোই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থান হবে না।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, অনলাইনের মাধ্যমে অল্প সময়ের ভিতরে অল্প খরচে বেশি মানুষকে সংক্রমিত করা যায়। এ ক্ষেত্রে পুলিশের তৎপরতার পাশাপাশি সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জঙ্গি আক্রমণ হওয়ার পরে অপারেশন চালানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র উদাহরণ যে বিভিন্ন অপারেশন আমরা চালাতে সক্ষম হয়েছি জঙ্গি হামলার আগেই। আমরা গোয়েন্দাভিত্তিক কার্যক্রম চালিয়ে জঙ্গি হামলা সম্পর্কে আগাম তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান চালিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই জঙ্গি নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিক, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জনকে হত্যা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির আত্মঘাতী সদস্যরা। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় ৫ জঙ্গি।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর