জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে সারা দেশের ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ হয়। দাম বেঁধে দেওয়া হয় এসএমএস এর মাধ্যমে। বর্তমানে প্রতি পিস ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৪০ পয়সা। অথচ খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা। বর্তমানে প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকা হওয়া যৌক্তিক। ডিমের দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ী সমিতির কারসাজি দায়ী।
গতকাল জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কার্যালয়ে ডিমের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী, ডিম ব্যবসায়ী সমিতি ও সংশ্লিষ্ট দফতর সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় ভোক্তা অধিদফতরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আরমান হায়দার, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপপরিচালক শরিফুল হক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সহকারী পরিচালক নুর উদ্দিন যোবায়ের, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হারুন অর রশিদ, কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহমেদ একরামুল্লাহ, বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, আবারও পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এই সেক্টরে বিশৃঙ্খলা রোধ করতে প্রয়োজন ডিম ক্রয়-বিক্রয়ের পাকা ভাউচার প্রদান। মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের গবেষণায় দেখা যায় একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.৮৮ টাকা। ডিমের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে বিপণন সংশ্লিষ্ট লোকজন জড়িত। তিনি বলেন, পাকা ভাউচার ছাড়া ডিমের কোনো লেনদেন হবে না। পাকা ভাউচার পাওয়া গেলে আমরা ট্রাকিং করতে পারব ডিমের ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্য কত এবং কত লাভ করা হয়েছে।তিনি ডিম বিক্রয়ের কারসাজির ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেন। আলোচনায় বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিমের দাম বেশি। দেশে পোল্ট্রি ফিডের উপাদান ও মেডিসিন আমদানি শুল্কমুক্ত করা আছে এবং ফিড উৎপাদন সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আমাদনিতে শুল্ক রেয়াত প্রদান করা হয়েছে। তথাপি দেশে পোলট্রি ফিডের মূল্য বেশি। আলোচনায় বিডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ডিমের উৎপাদন খরচ পরিবর্তনশীল। তিনি বলেন, ডিম উৎপাদকের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তাঁদের দ্বারা ডিমের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেশন সম্ভব না। তিনি ডিমের ক্ষেত্রে সাপ্লাই চেইনে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানান।