শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

কোটা আন্দোলন নেতাকে হল থেকে বের করার চেষ্টা প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

কোটা বাতিল আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমকে হল থেকে বের হয়ে যেতে নির্দেশ দেয় অমর একুশে হল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা। খবর ছড়িয়ে পড়ায় হলের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হলের সামনে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। জানা যায়, সারজিস আলমকে হল থেকে বের হওয়ার বিষয়ে ছাত্রলীগের হাইকমান্ড থেকে কোনো নির্দেশনা না দেওয়া সত্ত্বেও কেবল ব্যক্তিগত স্বার্থে অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী কয়েক নেতা তাকে বের হতে বলছে। সারজিসের হল ছাড়ার নির্দেশের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অমর একুশে হলের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে সারজিসকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। পরে রাত ১টার দিকে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম সৈয়দ ঘটনাস্থলে এসে সারজিসকে হল থেকে বের করা হবে না মর্মে নিশ্চয়তা দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন বন্ধ করেন।

সারজিস আলম বলেন, আমাকে হল থেকে বের করে ক্রেডিট নিতে চেয়েছিলেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা। তবে আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, আমাকে যারা বলেছেন, তাদের সঙ্গে হাইকমান্ডের কথাই হয়নি। এটা ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের নির্দেশনা ছিল না। এটা করেছে আমাকে বের করতে পারলে তা দেখিয়ে পদ পাওয়ার জন্য। তারা এটা স্বীকার করেছে, মাফও চেয়েছে।

তবে হল শাখা ছাত্রলীগের কোন কোন পদপ্রত্যাশী নেতা সারজিসের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন তাদের নাম জানা যায়নি।

জানতে চাইলে প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক এম সাঈদ বলেন, এখানে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। কাউকে হল থেকে বের করে দেওয়ার কোনো বিষয় নেই। এ সময় ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে জড়ো হতে এবং হল থেকে বের হতে বাধা প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ নেতারা। সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হলের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। কোনো কোনো হলে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কর্মীদের নিয়ে ছাত্রলীগ নেতারা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে তারা তালা খুলে আন্দোলনে যোগ দেন।

কোটা আন্দোলনের ব্যানার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে সূর্যসেন হলের গেট পার হতে গেলে বাধা দেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, হলের ভিতর কোটা আন্দোলনের স্লোগান কেন দিয়েছি এই অজুহাতে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান আমাদের বাধা দেয়। কবি জসীমউদ্দীন হলে ছাত্রলীগ নেতারা প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে হলের আড়াই তলায় অবস্থান নেয়।

বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা জানান, কেউ যেন কোটা আন্দোলনে যেতে না পারে সেজন্য রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সবাইকে হলে আটকে রাখা হয়েছে। একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, আমাদের ওপর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

তবে বাধা অতিক্রম করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর