চট্টগ্রামের নাট্যদল নান্দীমুখ ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন করল দলটির দর্শকনন্দিত প্রযোজনার নাটক ‘আমার আমি’। গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অসীম দাশ।
আমার আমি ইতিহাস আশ্রিত একটি নাট্য। ইতিহাসের চরিত্রকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে এর নাট্যকাহিনি। বাংলা রঙ্গালয়ের প্রবাদপ্রতীম অভিনেত্রী বিনোদিনী দাসীর আত্মজীবনীই এ নাট্যের কাহিনি বিন্যাস। বিনোদিনী দাসীর জন্ম আনুমানিক ১৮৬৩ সালে কলকাতার ১৪৫ কর্নওয়ালিস স্ট্রিটে। মাত্র ১১/১২ বছর বয়সে ১৮৭৪ সালে তিনি প্রথম মঞ্চ পাদপ্রদীপের আলোয় নিজেকে উদ্ভাসিত করেন গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটারে ‘শত্রুসংহার’ নাটকের মধ্যদিয়ে। ক্রমেই তার অভিনয় দক্ষতা মুগ্ধ করেছিল মানুষের হৃদয়। মনীষীদের প্রশংসা এবং সেই সময়ের খবরের কাগজের পাতায় পাতায় বড় বড় হেড লাইন করে লিখল।
এসবের পরও খ্যাতি ও ক্ষমতার চরম সিদ্ধির লগ্নে ১৮৮৭ সালে ১ জানুয়ারি রঙ্গালয়ে তার অভিনয় জীবনের ইতি টানেন।কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন তিনি অভিনয় ছেড়ে দিলেন? কী এমন ঘটনা ঘটেছিল? বিনোদিনী দাসী তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমার খাতা’, ‘আমার কথা’ ও ‘আমার অভিনেত্রী জীবন’-এ তার হৃদয়ে বপন করা যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। সেই যন্ত্রণারই এক প্রমাণ্য চিত্র আমার আমি। মেয়ে হয়ে জন্মগ্রহণ করাটাই কি বিনোদিনীর অপরাধ? মেয়ে মানুষরা সস্তা হতে পারে, তবে তারা কি এতটা সস্তা? মুহূর্তে তাদের ছুড়ে ফেলে দেওয়া যায়। আবার মুহূর্তেই কাছে টেনে নেওয়া যায়। এমন দোলাচলে মেয়েরা থাকতে পারে কী করে? বিনোদিনীর জীবনের সেই সত্যকে আবিষ্কারের চেষ্টা করা হয়েছে এ নাটকে। নাটকটিতে একক অভিনয় করেছেন দীপা রক্ষিত।