রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

১৬ বছরে ৩০০ প্রাণহানি

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। চট্টগ্রামে গত ১৬ বছরে পাহাড়ধসে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০০ জনের। ভয়াবহ পাহাড়ধস হয় ২০০৭ সালের ১১ জুন। ওই দিন সেনানিবাস এলাকা, লেডিস ক্লাব, কাছিয়াঘোনা, ওয়ার্কশপঘোনা, শহরের কুসুমবাগ, মতিঝর্ণা, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ প্রায় সাতটি এলাকায় নারী-শিশুসহ ১২৭ জন মারা যান। ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট লালখানবাজার মতিঝর্ণা এলাকায় চার পরিবারের ১২ জনের মৃত্যু হয়। ২০১১ সালের ১ জুলাই টাইগারপাস এলাকার বাটালি হিলের ঢালে পাহাড় ও প্রতিরক্ষা দেয়াল ধসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০১২ সালের ২৬-২৭ জুন প্রাণহানি ঘটে ২৪ জনের। ২০১৩ সালে মতিঝর্ণায় দেয়াল ধসে দুজন মারা যান। ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই বায়েজিদ এলাকার আমিন কলোনিতে পাহাড়ধসে মারা যান তিনজন। একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানার মাঝিরঘোনা এলাকায় মা-মেয়ে মারা যান। ২০১৭ সালের ১২ ও ১৩ জুন রাঙামাটিসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় পাহাড়ধসে প্রাণ হারান ১৫৮ জন। ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর নগরীর আকবরশাহ থানাধীন ফিরোজশাহ কলোনিতে মারা যান চারজন।

২০১৯ সালে কুসুমবাগ এলাকায় এক শিশুর মৃত্যু হয়। ২০২২ সালে ১৭ জুন মারা যায় আরও চারজন। বিচ্ছিন্ন দু-এক বছর বাদ দিয়ে   এভাবে প্রায় প্রতিবছরই বর্ষায় পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে নিয়মিত কাজ করছে জেলা প্রশাসন। গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবৈধ বসবাসকারীদের সরিয়েও নেওয়া হয়। কিছুদিন পর তারা আবার ফিরে আসে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় আছে ২৬টি। ছয়টি সরকারি সংস্থার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সাতটি পাহাড়। অবৈধ দখলে থাকা পাহাড়ের বেশির ভাগই রেলওয়ের। এ ছাড়া রয়েছে গণপূর্ত অধিদফতরের মালিকানাধীন আমবাগান এলাকার বাটালি হিলের পাহাড়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন টাইগার পাসের মোড়ে ইন্ট্রাকো সিএনজির পেছনের পাহাড়, লেকসিটি আবাসিক এলাকার পাহাড়, বিশ্ব কলোনি বড় পানির ট্যাংকির পাহাড় এবং ওয়াসার মতিঝর্ণা পাহাড়। এসব পাহাড়ের পাদদেশে বাস করছে প্রায় সাত হাজার পরিবার। শিশু, বৃদ্ধসহ বসবাসকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। এসব পাহাড়ে ঘর তুলে ভাড়া দিচ্ছেন প্রভাবশালীরা। কম খরচে থাকা যায় বিধায় এসব ঘরে ঝুঁকি উপেক্ষা বাস করছেন হতদরিদ্ররা।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব মো. আবদুল মালেক বলেন, বৃষ্টির সময় ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়। তাছাড়া সতর্কতার মাইকিং করা করা হয়। কিন্তু    সরিয়ে নেওয়ার পর আবারও তারা সেখানে ফিরে আসে।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর