শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
জলবায়ুসহিষ্ণু সবুজ কর্মপরিকল্পনা

গ্রিন আবাসিক জোন হবে লালবাগ ও হাজারীবাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রিন আবাসিক জোন হবে লালবাগ ও হাজারীবাগ

সরু রাস্তা, যানজট, ঘনবসতি, জলাবদ্ধতা ও পানি নিষ্কাশন সমস্যা; ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, অপরিকল্পিত অবকাঠামোসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত পুরান ঢাকার লালবাগ ও হাজারীবাগ। পুনঃউন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এই দুটি এলাকাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। প্রকল্পের মাধ্যমে পুনঃউন্নয়ন করে এই দুটি এলাকা গ্রিন আবাসিক জোনে পরিণত করা হবে। এরই মধ্যে হাজারীবাগ এবং লালবাগকে জলবায়ু সহিষ্ণু এবং পরিবেশবান্ধব এলাকায় রূপান্তর করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর দিলকুশায় রাজউক ভবনের অডিটোরিয়ামে ‘জলবায়ুসহিষ্ণু সবুজ কর্মপরিকল্পনা হাজারীবাগ ও লালবাগ সিটি ক্লাইমেট ফাইন্যান্স গ্যাপ ফান্ড’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে প্রকল্পের সারসংক্ষেপে এসব কথা বলেন রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো নবীরুল ইসলাম ও জিআইজেড-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্টিনা বারকার্ড। রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার (অব.)-এর সভাপতিত্বে ত্রয়ী অ্যাসোসিয়েটসের টিম লিডার ফজলে রেজা সুমন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাবেক সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, জিআইজেডের ক্লাস্টার প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. হামিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ নগর বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেন। মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, জনঘনত্ব একটি এলাকাকে কীভাবে পরিকল্পনার মাধ্যমে জলবায়ুসহিষ্ণু একটি গ্রিন জোন হিসেবে গড়ে তোলা যায়, সে জন্য এ পরিকল্পনা করেছি। আমরা একটি ব্রাউন ফিল্ডকে কীভাবে গ্রিন আইল্যান্ড করা যায় সে ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি। কারণ, এই নগরীর ৮৫ শতাংশ কনক্রিটে আচ্ছাদিত হয়ে আছে। ফলে প্রতিনিয়ত এই নগরী একটি হিট আইল্যান্ডে পরিণত হচ্ছে। তাই শহরকে আমরা সবুজায়নের মাধ্যমে একটি স্নিগ্ধ নগরিতে পরিণত করতে চাই। কর্মাশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে হাজারীবাগ নিয়ে আলোচনা শুনছি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে পুরান ঢাকার ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। পরিকল্পনা করেন, কিন্তু আমি চাই এই বছর শেষ হওয়ার আগে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিন। শুরু হলে কাজ কিছু হবে। কিন্তু শুধু পরিকল্পনার মধ্যে থাকলে কাজ হবে না। তিনি বলেন, ছোট বেলায় বুড়িগঙ্গার পানি মানুষকে খেতে দেখেছি। আর এখন হাত দেওয়া যায় না। এগুলো নষ্ট আমরাই করেছি। এ ছাড়া লালবাগের ঐতিহ্যকে রক্ষা করে যদি পরিকল্পনা করেন তাহলে খুব ভালো।

কারণ লালবাগের ঐতিহ্য নষ্ট করা যাবে না। এই এলাকাটি ৭০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, হাজারীবাগ এলাকাটিকে একটি টেকসই এবং বাসযোগ্য এলাকায় রূপান্তর করার জন্য রি-জেনারেশন প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে ট্যানারি মালিকদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে। দূষিত মাটি পরিষ্কার করা হবে এবং একটি নতুন মিশ্র-ব্যবহারের উন্নয়ন তৈরি করা হবে। পরিবেশগত দিক বিবেচনা করে নেওয়া প্রকল্পের ফলে এলাকাটি আবাসিক, বাণিজ্যিক অথবা বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে নতুনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে। হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকা ঐতিহাসিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহন করে। তাই পুনর্বাসনের সময় ঐতিহ্য এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি। স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে সবার জন্য টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর