শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম

আন্দোলনের প্রভাবে জনজীবনে দুর্ভোগ

দিনে এনে দিনে খাওয়া এমন শ্রমিকদের গত কয়েক দিনে কোনো কাজ মিলছে না। ফলে তারা অনাহারে দিন পার করছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ফোলাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সেলিম উল্লাহ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে এপোয়েন্টম্যান্ট নিয়েছিলেন। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে যানবাহন অনেকটা বন্ধ ছিল। শহরের প্রবেশ পথ কর্ণফুলি সেতুর উত্তর-দক্ষিণ পাশে চলছিল সংঘর্ষ। ফলে সিরিয়াল নেওয়ার পরও চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি সেলিম।

কেবল তিনি নন, তার মতো হাজার হাজার মানুষ দৈনন্দিন জরুরি কাজ করতে পারছেন না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। স্থবির হয়ে পড়েছে নাগরিক জীবন। কর্মহীন হয়ে পড়েছে শ্রমিকরা। কর্মব্যস্ত সড়কও এখন ফাঁকা। বন্ধ হয়ে গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট সব বাণিজ্যিক কার্যক্রম। মো. সেলিম উল্লাহ বলেন, অনেক কষ্ট করে একজন বিশেষজ্ঞের সিরিয়াল নিয়েছিলাম। কিন্তু আন্দোলনের কারণে যেতে পারেননি। এখন আবারও সিরিয়াল নিতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর সাধারণ মানুষের জনজীবনে এক প্রকার স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্য, সবজি ও ফলমূলের দাম। প্রতিটি সবজির দাম ৫ থেকে ১৫ টাকা, ফলমূলের দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।

এদিকে প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে এখন অনেক কাজই অটোমেশন পদ্ধতিতে চলে। কিন্তু ইন্টারনেট সেবা না থাকায় অটোমেশন পদ্ধতির সব কার্যক্রম বন্ধ।

তা ছাড়া সড়কে বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলক কম যানবাহন থাকলেও উল্লেখযোগ্য যাত্রী নেই। যাত্রী কম থাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করছেন রিকশা, টেক্সিসহ অন্যান্য পরিবহনের চালকরা।

অন্যদিকে বন্যা, বৃষ্টি ও প্রকৃতিক বিভিন্ন দুর্যোগে এমনিতেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রমে সময় নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিয়েও উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।

তাছাড়া নগরে নিয়মিত কিছু দিনমজুর শ্রমিক আছেন। দিনে এনে দিনে খাওয়া এমন শ্রমিকদের গত কয়েক দিনে কোনো কাজ মিলছে না। ফলে কাজ না থাকায় দিনমজুর ও তাদের পরিবার অসহায়, অনাহারে দিন পার করছেন।

চট্টগ্রামের অধিকাংশ বিদ্যুতের মিটার প্রিপেড সিস্টেমের হওয়ায় কিছু মিটারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে হয়। গত কয়েক দিনে অনেক মিটারে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আর রিচার্জ করতে পারছেন না গ্রাহকরা। ফলে অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছেন অনেক নাগরিক।

 

সর্বশেষ খবর