বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
সহিংসতায় অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতি

ক্ষতচিহ্ন চট্টগ্রামজুড়ে

ব্যবসায়িক ক্ষতি ১২ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউ জারির কারণে বড় আঘাত এসেছে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে। এ সময় প্রতিদিন গড়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। চার দিনে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবি- এ আন্দোলনের কারণে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নষ্ট হয়েছে ব্যবসায়িক ইমেজ।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, ‘বন্ধের দিনগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা করে ক্ষতি হয়েছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের। হঠাৎ বন্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের ইমেজের। যা পুষিয়ে নিতে বেশ কষ্ট সাধ্য হবে। গতকাল থেকে চট্টগ্রামের কিছু কিছু কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। পণ্য পরিবহন হচ্ছে স্বাভাবিক। তবে ইন্টারনেট সেবা চালু না হওয়া পর্যন্ত বাণিজ্য স্বাভাবিক হবে না।’

বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পোশাক কারখানা বন্ধের কারণে আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধের কারণে ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করতে অনেক সময় লাগবে।’

জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউয়ের মধ্যে ব্যাঘাত হয় ব্যবসা-বাণিজ্যের। চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে পণ্য-ওঠানামা স্বাভাবিক থাকলেও বন্ধ ছিল পণ্য ডেলিভারি। পরিবহন সংকটের কারণে ডিপোগুলো থেকে আসতে পারেনি রপ্তানি পণ্য। ফলে আমদানি-রপ্তানিকারকদের ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বন্ধের কারণে বড় ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে তৈরি পোশাক খাতে। শিডিউল অনুযায়ী ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছাতে না পারা, আমদানি করা কাঁচামাল কারখানায় আনতে না পারা এবং কারখানা বন্ধের কারণে শুধু চট্টগ্রামের পোশাক কারখানা মালিকদের দৈনিক গড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হাজার কোটি টাকা।

পরিবহন সংকট এবং কারফিউয়ের কারণে চার দিন ধরে কার্যত বন্ধ রয়েছে দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকার বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জ। শনিবার থেকে কোনো ক্রেতা আসেনি এ পাইকার বাজারে। ফলে প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে শত শত কোটি টাকা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় শত কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। কোটা সংস্থার আন্দোলন চলাকালে হামলা ও ভাঙচুরের শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্য ও সরকারি স্থাপনা। নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তার মধ্যে নগরীর চান্দগাঁও থানা ভবনের প্রধান ফটক হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় প্রধান ফটক, থানায় সংরক্ষণে থাকা বিভিন্ন মামলার আলামত নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেট ট্রাফিক পুলিশ বক্স, বহদ্দারহাট ট্রাফিক পুলিশ বক্স, নিউমার্কেট ট্রাফিক পুলিশ, খুলশী রেললাইন ট্রাফিক পুলিশ বক্স, কাজীর দেউড়ি মোড় সিএমপি সার্ভিস সেন্টারের হামলা হয়েছে। এ ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) কাজী তারেক আজিজ বলেন, আন্দোলনে আমাদের ১৭টি যানবাহন ক্ষতিগ্রুস্ত হয়েছে। এসব ঘটনায় ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় চার দিনে ৬১ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর