বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সিলেটে পর্যটনে ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

মে মাস থেকে তিন দফা বন্যা। বন্যার রেশ কাটার আগেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশজুড়ে অচলাবস্থা। গেল তিন মাস সিলেটে দেখা মেলেনি পর্যটকের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল আজহাসহ পর্যটনের এ ভরা মৌসুমে সিলেট বিভাগে পর্যটন খাতে ক্ষতি হয়েছে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে। চলমান পরিস্থিতিতে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না হোটেলগুলো। সিলেটের পর্যটনশিল্প রক্ষায় সরকারি প্রণোদনার বিকল্প নেই বলেও দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা। পর্যটনশিল্প ঘিরে সিলেটে গড়ে উঠেছে কয়েক শ হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস। এ খাতে বিনিয়োগ কয়েক হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া সিলেটের রেস্টুরেন্ট, রেন্ট-এ-কার, কুটিরশিল্প ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত পর্যটনশিল্প। পর্যটন কেন্দ্রগুলো কেন্দ্র করে স্থানীয় লাখো মানুষের জীবনজীবিকার চাকা ঘোরে। কিন্তু মে মাসে সিলেটে শুরু হয় বন্যা। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহয় পর্যটক আসতে শুরু করেন। ফের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা শুরু করেন পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সে স্বপ্ন মিলিয়ে যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে। দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরে সংঘাত-সংঘর্ষ ও কারফিউর কারণে এ খাতের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

সিলেটের কয়েকজন হোটেল ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে সারা দেশে পর্যটন ব্যবসা কমলেও সিলেটে পর্যটকের আগমন হয় সবচেয়ে বেশি। বর্ষায় প্রকৃতি নবযৌবন লাভ করে, এতে সৌন্দর্য বাড়ে প্রকৃতিনির্ভর সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর। ফলে ওই সময় সারা দেশের পর্যটকের ঝোঁক থাকে সিলেটে। কিন্তু এবার বন্যা ও কোটা আন্দোলনে পর্যটকদের দেখা মেলেনি সিলেটে। এমনকি বন্যার কারণে ঈদুল আযহায়ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ছিল। ফলে তিন মাস ধরে সিলেটের বেশির ভাগ হোটেল পর্যটকশূন্য।

নগরের জিন্দাবাজারের হোটেল গোল্ডেন সিটির মহাব্যবস্থাপক মৃদুলকান্তি দত্ত মিষ্টু বলেন, ‘তিন মাস ধরে পর্যটকের দেখা মিলছে না। ফলে হোটেল অতিথিশূন্য রয়েছে। হোটেল ব্যবসা একদম ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। মাস শেষে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল দেওয়া যাচ্ছে না। বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাস অফিস সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকি দিচ্ছে। এর ওপর রয়েছে ভ্যাটের চাপ। হোটেলের স্টাফের বেতন দেওয়া যাচ্ছে না।’

সিলেট চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এমদাদ হোসেন বলেন, ‘পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে হোটেল, ট্রান্সপোর্ট, রেস্টুরেন্ট, কুটিরশিল্পসহ অনেক খাত জড়িত। পর্যটকসমাগম বেশি হলে এসব খাতের ব্যবসা চাঙা থাকে। আর পর্যটক না এলে এ খাতের ব্যবসায় ধস নামে। তিন মাস ধরে সিলেটের পর্যটন খাতের ব্যবসা খুবই কঠিন সময় পার করছে। সিলেট বিভাগে এ খাতে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে। এ খাত বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারি প্রণোদনার প্রয়োজন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর