শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিপাকে খামারিরা

১০০ টাকার দুধ ৪০ টাকা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে সাধারণত প্রতি লিটার গরুর দুধ বিক্রি হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অবরোধ এবং কারফিউর সময় প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করতে হয়েছে ৪০-৫০ টাকায়। ফলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিপাকে পড়েছেন চট্টগ্রামের প্রায় ৩০ হাজার দুগ্ধ খামারি। যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় দুধ সরবরাহ করতে পারেননি তারা। এ কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে গত বুধবার থেকে কিছু কিছু দুধ ক্রেতারা নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন খামারিরা। তারা বলছেন, গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে প্রতি লিটার দুধের উৎপাদন খরচ পড়ে ৬৫-৭০ টাকা।জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় ছোটবড় মিলে খামারি আছেন প্রায় ৩০ হাজার। এসব খামারে গরু আছে প্রায় ২৩ লাখ এবং গাভি প্রায় ৮ লাখ। এসব গাভি থেকে দৈনিক দুধ উৎপাদন হয় ৬ দশমিক ৮ মেট্রিক টন। অন্যদিকে এককভাবে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী উপজেলায় ১ হাজার ৪০০ খামারে আছে প্রায় ৩৫ হাজার গাভি। এসব গাভি দৈনিক দুধ দেয় প্রায় ৫০ হাজার লিটার। এখানকার মিল্ক ভিটা ডেইরি ফার্মে দুধ শীতলকরণ কেন্দ্রে রাখা যায় ১০ হাজার লিটার। কারফিউর সময় ৩০ হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করা গেলেও ৮ থেকে ১০ হাজার লিটার দুধ নষ্ট হয়ে যায়। উৎপাদিত দুধের অধিকাংশই কেনে মিষ্টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, ‘আমরা সাধারণ সময়ে প্রতি লিটার দুধ কখনো ৯০, কখনো ১০০ টাকায় কিনি। কিন্তু অবরোধের সময় এখানে ৪০-৫০ টাকায় দুধ বিক্রি হয়েছে।’

মিল্ক ভিটার দুধ শীতলকরণ কেন্দ্রের পরিচালক নাজিম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘সৃষ্ট পরিস্থিতির সময় ১০ হাজার লিটার শীতলকরণ কেন্দ্রে এবং ৩০-৩২ হাজার লিটার স্থানীয় ও শহরের কিছু ক্রেতা নিয়ে গেছেন। কিন্তু তখন দৈনিক প্রায় ৮-১০ হাজার লিটার দুধ অবিক্রীত থেকে গিয়েছিল। ফলে খামারিরা ক্ষতির সম্মুখীন হন।’ চট্টগ্রাম ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাঈম উদ্দিন বলেন, ‘এমনিতেই দুধের সঠিক দাম না পাওয়া, গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা সংকট আমাদের। তার ওপর চলমান পরিস্থিতি আমাদের আরেকটা ঝাঁকুনি দিল। অনেক খামারিই কম বা নামমাত্র মূল্যে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। অনেক খামারির কাছে অবিক্রীত দুধ থেকে যাচ্ছে।’ চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশাসনের সহযোগিতায় দুধ সরবরাহ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের কোনো খামারি দুধ নষ্ট হওয়ার বিষয়ে আমাদের অভিযোগ করেননি। খামারিদের বিষয়টা আমাদের বিবেচনায় আছে।’

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর