সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে স্বাস্থ্য খাত চলছে অনিয়মে ভর করেই

প্রতিটি অভিযানেই মেলে অব্যবস্থাপনা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্র চলছে অনিয়মের ওপর ভর করে। হাসপাতাল ল্যাবে অভিযান পরিচালনা করলেই মিলছে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা। গুনতে হয় জরিমানা, বন্ধ করা হয় প্রতিষ্ঠান। তা ছাড়া, চট্টগ্রামে অসংখ্য অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকলেও অভিযান পরিচালিত হয় মাঝে মাঝে। কিন্তু অভিযানের কোনো কার্যকর প্রভাব দেখা যায় না।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় চট্টগ্রামে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে টানা এক সপ্তাহ লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। তখন চট্টগ্রাম নগরে অনুমোদনহীন ১০টি হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও থেরাপি সেন্টার বন্ধ করা হয়। প্রতিটি অভিযানেই মিলেছে অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ল্যাব। চট্টগ্রামে অনুমোদিত হাসপাতাল-ল্যাব আছে ১৯০টি।

জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা আন্দোলনের সদস্যসচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগছে। স্বাস্থ্য খাতেও এ পরিবর্তন দরকার। এটি কেবল মুখে বললে হবে না। পরিবর্তন আনতে আইনি নিশ্চয়তাও দিতে হবে। কারণ স্বাস্থ্যসেবা একটি মৌলিক অধিকার। মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। তাই আমরাও চাই স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তন আসুক। চট্টগ্রামেও এর প্রতিফলন ঘটুক। বেসরকারি স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানগুলোয়ও অনিয়ম দূর করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা আনা দরকার।’

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘চট্টগ্রামের অনুমোদনহীন এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিচালিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবের বিরুদ্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন কার্যালয় প্রয়োজনীয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে চিঠিও দিয়েছে জেলা প্রশাসনকে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নগরের বেসরকারি একাধিক হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। অভিযানে হাসপাতালে বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাবে রক্ষিত রিপোর্ট প্রদানের প্যাডে টেকনোলজিস্টের অগ্রিম স্বাক্ষর দেখতে পাওয়া, ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চলমান থাকা সত্ত্বেও রাতের শিফটে কোনো মেডিকেল অফিসার দায়িত্ব পালন না করা, ল্যাবে মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল রাখা, নিম্নমানের ডিস্ট্রিল ওয়াটার ব্যবহার করা, ইমারজেন্সিতে ইসিজি করার জন্য কোনো কার্ডিওগ্রাফার না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল থাকা, ডিস্ট্রিল ওয়াটারের বোতলের লেভেলে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ও প্রস্তুতকারকের নাম-ঠিকানা না থাকার মতো অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব অনিয়মের কারণে হাসপাতালগুলোকে জরিমানা এবং সতর্ক করা হয়েছিল। তা ছাড়া ২৯ ফেব্রুয়ারি তিনটি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। অভিযানে হাসপাতালে কিউআর কোড রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকা, প্যাথলজিতে মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল পাওয়া ও নোংরা পরিবেশ পাওয়ায় জরিমানা ও সতর্ক করা হয়। এভাবে হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করলেই মিলছে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর