শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

মানুষের জীবন রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে : ত্রাণ উপদেষ্টা

বন্যা এলাকায় বিভিন্ন বিভাগের ছুটি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধারে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, ছাত্র, জনতা ও প্রশাসন কাজ করছে।

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ফেনী ও নোয়াখালী এলাকায় আকস্মিক ভয়াবহ বন্যার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, মানুষের জীবন রক্ষা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে নিয়োজিত করা হয়েছে। সার্বিকভাবে সরকার চেষ্টা করছে যাতে মানুষের জীবন, জানমাল, গবাদিপশু রক্ষা করা যায়। বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রম এবং ত্রাণ বিতরণে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাছাড়া, সে সব সংগঠন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করে তাদেরকেও নিয়োজিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ত্রাণ হিসেবে খাদ্য এবং নগদ অর্থের সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে। ভারতে বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে বলে বন্যা হয়েছে- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে যোগাযোগ হচ্ছে। বাঁধ খোলা হয়েছে, এটা পত্রপত্রিকায় লিখেছে, বিভিন্ন মাধ্যমে এসেছে। এটা সরকারিভাবে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে।

বন্যার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের আট জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। জেলাগুলো হচ্ছে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বন্যায় দেশের আট জেলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে পানিতে ডুবে দুজন মারা গেছেন। এ ছাড়াও ৫০ উপজেলা বন্যা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ৩৫৭টি। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন। মারা যাওয়া লোকসংখ্যা ২ জন (ফেনী- একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া একজন)। পানিবন্দি-ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ১ হাজার ৫৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ৮ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রীর বিবরণ দিয়ে বলা হয়েছে, এ ছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহের জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।

বন্যা এলাকায় বিভিন্ন বিভাগের ছুটি বাতিল : বন্যাকবলিত এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছে কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। গতকাল আদালা আদেশে এসব তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া গতকাল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বন্যা মোকাবিলায় জরুরি প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর