রংপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মামলার বিষয়ে চাপ দিলে রংপুরের ছাত্র-জনতা তাকে বা তাদের একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করবে। আদালতের কাছে অনুরোধ-কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন কাঠগড়ায় না দাঁড়ান। শনিবার রাতে রংপুর নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবু সাঈদের রক্তে রঞ্জিত রংপুরের এ ভূমিতে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল বা সন্ত্রাসী কোনো ধরনের অপকর্ম করলে তা প্রতিহত করার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর সব সময় প্রস্তুত থাকবে। একটা বিষয় সবার হয়তো নজরে এসেছে, রংপুরে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবার যে মামলাগুলো করেছে এতে অনেকে চাপে পড়ে কিছু মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের নামও যোগ করেছেন। তাদের বিভিন্নভাবে অর্থ ও প্রলোভন দিয়ে প্রভাবিত করেছে একটি গোষ্ঠী। যা একটি দেশের সুশাসন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যথেষ্ট। বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। সমাজের যেখানে অন্যায়, অনিয়ম সংঘটিত হবে সেখানেই আমাদের প্ল্যাটফরম দায়িত্ব নিয়ে তা সমাধানে সচেষ্ট থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রংপুরে একটা বিষয় খুব লক্ষণীয়, কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোর করে বা স্বেচ্ছায় প্রতিষ্ঠানপ্রধান পদত্যাগ করছেন। আন্দোলন করা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার, যে কোনো বৈধ আন্দোলন আমরা সমর্থন করছি। তবে যদি অবৈধভাবে বা বেআইনিভাবে কোনো গোষ্ঠী এ রকম কাজ করে, এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্ট-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ বিষয়টি সমর্থন করে না। অনেক জায়গা থেকে এমনও তথ্য পেয়েছি, অনেকে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে শিক্ষার্থীদের এমন কাজে লিপ্ত করাচ্ছেন। কেউ যদি অন্যায়, দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন তাহলে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া উচিত। সে বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করব।

তারা বলেন, বর্তমানে দেশের ১২ জেলায় যে বন্যা হচ্ছে তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি বলে আমরা মনে করি। এ দুর্যোগে মানুষের কষ্ট কিছুটা লাঘবে আমাদের প্ল্যাটফরম সারা দেশে কাজ করছে। তার ধারাবাহিকতায় রংপুরে আমরা গণত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। এতে রংপুরবাসীর কাছে আহ্বান-আপনারা আপনাদের সাধ্যমতো শুকনো খাবার, পানি, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করবেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সমন্বয়ক ইমরান আহমেদ, মোতাওয়াক্কীল বিল্লাহ শাহ, ইমতিয়াজ আহম্মদ ইমতি, আলী হোসাইন, আরাফাত, নাহিদ, মাহির ফয়সাল, ডা. লিমন পাঠান ও রিনা মুরমু। উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুরের অন্য প্রতিনিধিরা।