শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

এস আলমের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে

রিজার্ভ থেকে এখন ডলার বিক্রি হচ্ছে না : গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক

সমালোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এজন্য এস আলমের সম্পদ কাউকে না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন গভর্নর।

ব্যাংকে বন্ধক নেই, এমন সম্পত্তি বিক্রি করার চেষ্টা করছে এস আলম গ্রুপ, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটা আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। আমরা সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বলব। আর এ গ্রুপের সম্পদ যেন কেউ না কেনে। এ সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এস আলম ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি, যিনি সুপরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুট করেছেন। এমন সুপরিকল্পিতভাবে পৃথিবীতে কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেছে কি না, তা জানা নেই। ব্যাংক খাত সংস্কার নিয়ে গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং কমিশন গঠন করে সেটা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সেখানে যুক্ত থাকবে। মাসখানেকের মধ্যে এটা করা হবে। বিদেশি বিশেষজ্ঞ নেওয়া হবে। শ্রীলঙ্কা কীভাবে সংস্কার করেছে, তা-ও দেখা হবে।

ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে গভর্নর বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের নতুন বোর্ডকে কর্মপরিকল্পনা দিতে বলেছি। এখানে কাজ করতে হবে, বসে থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক সব ধরনের সহায়তা করবে। তারা সহায়ক ভূমিকা পালন না করলে বোর্ড আবার পরিবর্তন করা হবে। সবাইকে নজরদারি করা হচ্ছে। অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডলারের দর একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। এমন পর্যায়ে থাকলে আগামী ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে; যদিও বন্যা একটু দুশ্চিন্তা তৈরি করছে। তা-ও আশাবাদী; দু-এক মাস বেশি লাগতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘রিজার্ভ থেকে এখন ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না। তাই রিজার্ভ কমার আশঙ্কা নেই। ভবিষ্যতে রিজার্ভ আরও বাড়বে। সরকারের চাহিদা (ডলার) আন্তব্যাংক মার্কেট থেকে  মেটানো হচ্ছে।

সাবেক দুই গভর্নরের বিষয়ে জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখানে সুশাসনের অভাব ছিল। সামনে যে হবে না, তেমন নয়। তবে আমার হাত দিয়ে হবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও সংস্কার করতে হবে। কারণ তারাও দায় এড়াতে পারে না।

আমানতকারীদের উদ্দেশে আহসান এইচ মনসুর বলেন, গ্রাহকদের বলব, ধৈর্য ধরেন। একবারে সবাই টাকা তুলতে যাবেন না। তাহলে কেউ টাকা দিতে পারবে না। অনেকে অতিরিক্ত সুদের লোভে এসব ব্যাংকে টাকা রেখেছেন। এখন অধৈর্য হলে হবে না। আমানতের টাকা লোকসান হোক, এটা আমরা চাই না। আমরা টাকা ছাপিয়ে কোনো আমানতের টাকা দেব না। কারণ সেটা জাতির জন্য ভালো হবে না। তখন মূল্যস্ফীতি ১০০ শতাংশ হয়ে যাবে। যেটুকু টাকা না তুললে নয়, সেটা তোলেন। পাঁচ থেকে ছয় মাস পর অবস্থার পরিবর্তন হবে।

গভর্নর আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো আমানতকারী টাকা হারায়নি। ব্যাংকে আগে সুশাসন ফেরাতে হবে, যাতে আমানতকারীদের আস্থা ফিরে আসে। এজন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর