পাখির চোখে তাকালে যে কারও চোখ আটকে যাবে বাগানবাড়িটি দেখে। চারপাশে পুকুর, আম, লিচু আর সুপারি গাছের সারি সারি বাগান সঙ্গে লাখ টাকার বনসাঁইসহ আলিশান বাড়ি রয়েছে বাগানবাড়িটিতে। চোখ জুড়ানো এই বাগানবাড়িটির মালিক সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। ২০১০ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌধুরীহাট বাজারের পূর্ব পাশে ২৫ বিঘা জমি কেনেন শাহরিয়ার আলম। নাম্রদন নর্থ বেঙ্গল এগ্রো ফার্মস লিমিটেড। তবে ক্রয় করা জমির চেয়েও আরও প্রায় ১০ বিঘা জমি বেশি দখলে নিয়ে বাগান বাড়ি করেছেন তিনি। তার মধ্যে রয়েছে অন্যের পৈত্রিক সম্পদসহ সরকারি সম্পত্তি? এই সম্পদ দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ২০০ কোটি টাকা মর্গেজ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
চোখ জুড়ানো এই বাগানবাড়ির চারপাশে রয়েছে চারটি পুকুর, পাশে সারি সারি আম-সুপারি গাছ ও ড্রাগনের বাগান। ধান আবাদের পাশাপাশি আবাদ হয় লাউ, পেঁপেসহ নানান ধরনের সবজি। রয়েছে বিভিন্ন জাতের বনসাঁই গাছ। বাড়ির পাশে হলেও ভিতরে প্রবেশ-নিষেধ ছিল স্থানীয়দের। নিজের কেনা জমি ছাড়াও ক্ষমতার দাপটে জোরপূর্বক জমি দখলেরও অভিযোগ তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা খোকন বলেন, আমরা জানি এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর জায়গা। এখানে প্রবেশ একবারে নিষেধ ছিল। এতদিন কেউ কখনো এখানে প্রবেশ করতে পারেনি। ভিতরে কি আছে কি হচ্ছে এসব নিয়ে মানুষের মনে অনেক কৌতূহল ছিল। এখানে কেনা জমি ছাড়াও অনেকের কাছে জোর করে নেওয়া জমিও আছে।ভিতরে কাজ করা শ্রমিক রফিকুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এখানে চাষাবাদ করা হয়। বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ধান চাষ হয়। পুকুরে মাছ চাষ হয়। আলুর জাত নিয়ে কাজ করার ল্যাব আছে। এ ছাড়াও অনেক গাছ আছে সেগুলোর যত্ন নিতে হয়।
স্থানীয় আমজাদ হোসেন বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এখানে এসে বাংলো বাড়ি বানিয়েছে। এত জমি কিনে রেখেছে তাহলে ওদিকে তার কত জমি আর সম্পত্তি আছে। এখানে পুকুর, আলিশান বাড়ি বানিয়েছে। উনার কত সম্পত্তি সেসব খোঁজ নিয়ে দেখা দরকার সরকারের। আর এসব সম্পত্তি কীভাবে নেওয়া হয়েছে সেসব বিষয়ে খতিয়ে দেখা উচিত।
নর্থ বেঙ্গল এগ্রো ফার্মস নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে মন্ত্রীর বাগান বাড়িতে। সেটির ম্যানেজার তরিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, নিয়মিত ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক কাজ করেন বাগান বাড়িতে। বিভিন্ন বাগান ও বাড়ির পাশাপাশি রয়েছে টিস্যু কালচার ল্যাব। এখানে অনেক দামি বনসাঁই গাছ রয়েছে। সেগুলোর যত্ন নিতে হয়। তবে দেশের এমন পরিস্থিতিতে এখানকার তেমন আর খোঁজখবর নেন না প্রতিমন্ত্রীর ভাই সাইফুল আলম।