সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্বেচ্ছাসেবক দলের এক কমিটিতে অর্ধযুগ

তৈরি হচ্ছে না নতুন নেতৃত্ব

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

এক কমিটিতে অর্ধযুগ পার করছে চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল। নিয়মিত কমিটি না হওয়ার কারণে তৈরি হচ্ছে না নতুন নেতৃত্ব। দুই বছর আগে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কর্মী সম্মেলন করলেও কোনো কাজ হয়নি। ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই  ঘোষণা করা স্বেচ্ছাসেবক দলের এ কমিটির মেয়াদ এখন ছয় বছর। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। দলের ত্যাগী, নির্যাতিত ও মেধাবীদের হাতেই আগামীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্ব যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরবর্তী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে। এরপর বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম আপাতত বন্ধ। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হবে। তখন দলীয় ফোরামে বসে আলোচনা করব, কমিটি গঠন ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার। কোনো কমিটি আগে করতে হবে বা কোনো কমিটি পরে। তবে পরিবর্তন তো হবে, এটা একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়া।

দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্ভাব্য নতুন কমিটির শীর্ষ পদগুলোও ভাগাভাগি হবে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অনুসারী বিবেচনায়। কোন নেতার কী যোগ্যতা সেটা না দেখে বিএনপি নেতাদের অনুসারী যোগ্যতায় কমিটি হলে তাতে ছিটকে পড়বে দলের ত্যাগী ও যোগ্য নেতৃত্ব। যার কারণে শীর্ষ পদে যাদের রাখা হবে বিগত দিনে তাদের আমলনামা নিয়েই আনা হোক। নতুন কমিটি হলে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী মূর্তজা খান আলোচনায় আছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দীন নাহিদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক দিদার হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মহসিন কবির আপেল, রিফাত হোসেন শাকিল, সৌরভ প্রিয় পাল আলোচনায় রয়েছে।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই এইচ এম রাশেদ খানকে সভাপতি এবং বেলায়েত হোসেন বুলুকে সাধারণ সম্পাদক করে সাত জনের আংশিক কমিটি করা হয়। এর প্রায় দেড় বছর পর ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল।

 সে সময়ে সাবেক দুই ছাত্রদল নেতার মাধ্যমে কমিটি গঠন করার ফলে পুরো নগরজুড়ে নানা রাজনৈতিক কর্মকান্ড পালন করে রাজপথে সরব ছিল স্বেচ্ছাসেবক দল। পাশাপাশি নগরীর প্রায় সব থানা কমিটিতে ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী নেতাদের মাধ্যমে গঠন করা হয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি। রাশেদ-বুলু স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ায় এ সংগঠন। যদিও এর আগে সৈয়দ আজম উদ্দীন সভাপতি ও এসকে খোদা তোতন সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ১৩ বছর দায়িত্ব পালনকালে সেভাবে কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা দেখা যায়নি। যার কারণে আসন্ন নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সাবেক ছাত্রনেতা, রাজপথে সক্রিয় ও চট্টগ্রামের ‘লোকাল’ নেতাদের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাদের দাবি, অনেক নেতা চট্টগ্রাম নগরে রাজনীতি করলেও তারা চট্টগ্রামের ভোটার নন। এমন নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করলে সামনে নির্বাচনে তারা সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারবে না। কারণ যারা এখানকার ভোটার না তারা কীভাবে স্থানীয় ভোটারদের ভোট টানতে পারবে ধানের শীষে। এ ছাড়াও চট্টগ্রামের স্থানীয়দের মধ্যে যাদের পারিবারিক ঐতিহ্য ও স্থানীয় পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এমন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিপরীতে অনেকে শহরের স্থানীয় বাসিন্দা না হওয়ার কারণে তারা সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন না। নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর অনুসারী ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দীনের অনুসারী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর