শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

বেপরোয়া হয়ে উঠছে অপরাধীরা

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

বেপরোয়া হয়ে উঠছে অপরাধীরা

চট্টগ্রামে দলীয় ছত্রছায়ায় বাড়ছে অপরাধ। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের লোকেরা যেসব অপরাধে জড়িত ছিলেন গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সেসব অপরাধে জড়াচ্ছেন বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। আবার অনেক অপরাধীর দলীয় পরিচয় না থাকলেও তাদের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিএনপির দলীয় অবস্থান সব ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে হলেও নগরীর ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে অপরাধীরা।

এ প্রসঙ্গে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘যারা দলের নাম বিক্রি করে নানা অপকর্ম করছে তাদের বিষয়ে আমাদের অবস্থান দলীয়ভাবে জিরো টলারেন্স। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ইতোমধ্যে সারা দেশে সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নাম বিক্রি করে অপকর্মে লিপ্ত থাকবে তাদের দলীয়ভাবে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না, সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে দল অ্যাকশনে যাবে।’ 

জানা যায়, গত ৩০ আগস্ট মিরসরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র গিয়াস উদ্দিনকে অপহরণ করে খুলশী থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নুর আলম সোহাগ। ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর মেয়রের ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এ ছাড়া জিইসির মোড়সহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে নুর আলম সোহাগ ও তার সহযোগী বরিশাল কলোনির রাজু ও জাহাঙ্গীর ওরফে টুকু মোল্লার বিরুদ্ধে। নগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনের অনুসারী হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ দলীয় একাংশের।

এ ব্যাপারে সাবেক মেয়র গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘গত ৩০ আগস্ট দুপুরে জিইসির সেন্ট্রাল প্লাজার সামনে থেকে আমাকে ধরে দামপাড়া গ্রিনলাইন বাস কাউন্টারের পাশের একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। আমার ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তিন দিনে স্বজনদের কাছ থেকে অন্তত ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। থানা পুলিশে অভিযোগ করার মতো পরিবেশ না থাকার কারণে কোনো অভিযোগ করিনি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুর রহমান আলফাজ, যুবদল নেতা নুরুল আমিন ও নওশাদ আল জাসেদুর রহমানের নেতৃত্বে তাদের অনুসারীরা বরিশাল বাজার এলাকায় গত ৯ সেপ্টেম্বর চাঁদা না দেওয়ায় বক্কর নামে একজনের ঘর, গাড়ি ভাঙচুর করে। বিসিক শিল্প এলাকার বিভিন্ন দোকান দখল, রাউজান কলোনির এক বাড়ি মালিকের কাছ থেকে চাঁদা আদায়সহ আশপাশের বিভিন্ন গার্মেন্টসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হুমকি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার লাকি প্লাজার ফুড ফেয়ার শো-রুমে গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ রয়েছে দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কাইয়ুম হোসেন রিপন, যুবদল নেতা মাহাবুব আলম, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসম্পাদক রবিউল হোসেন রবির বিরুদ্ধে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও চলছে দখল, চাঁদাবাজির মতো ঘটনা। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন বা অন্য কারও কাছে এসব ঘটনার ব্যাপারে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা।

সর্বশেষ খবর