মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক ট্যাগ, ঢাবিতে বিক্ষোভ

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ইস্যু

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফার বিরুদ্ধে ইসলামবিদ্বেষী ট্যাগ দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখন অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনকে ইসলামবিদ্বেষী ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। যা বৈষম্যহীন ও সমতার বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায়। ট্যাগিংয়ের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যেসব শিক্ষক শিক্ষার্থীবান্ধব ছিলেন তাদের মব লিঞ্চিংয়ের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রমূলক ট্যাগ দিয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। বিশ্বববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সাবেক ভিপি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, আমাদের দেশে এখনো ফ্যাসিবাদের প্রতিটি উপাদান রয়ে গেছে। এই যে মবের তাণ্ডব ফ্যাসিবাদে রূপ নিয়েছে তার একটি নগ্ন উদাহরণ হচ্ছে সামিনা লুৎফা ম্যাম ও কামরুল হাসান মামুন স্যারের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে যে আক্রমণ করা হচ্ছে সেটা।

শিক্ষার্থী ইমি বলেন, ২০১২ সালে ড. ইউনূসও এলজিবিটিকিউ অধিকার নিয়ে কথা বলেছিলেন কিন্তু তার প্রতি কোনো বিদ্বেষমূলক আচরণ নেই। তার প্রতি ঠিকই নতি স্বীকার করছে। কিন্তু অন্যদিকে, সামিনা লুৎফা ম্যাম ও কামরুল হাসান স্যারের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। একই ধরনের আচরণের শিকার হতে দেখেছি আমরা আনু মোহাম্মদ স্যার ও তানজিম উদ্দিন খান স্যারকে। আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা সব সময় আমাদের পাশে থেকেছেন, গত ১৫ বছর ধরে তারা আমাদের পাশে থেকেছেন আর কারা থাকবেন, আমরা সবই জানি। আমাদের এই শিক্ষকরা যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, তাদের নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে। কেন বারবার তাদের সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা হবে? আমার মতাদর্শের সঙ্গে আরেকজনের মতাদর্শ নাও মিলতে পারে। এখানে বড় জোর আমি তাকে এড়িয়ে চলতে পারি। কিন্তু আমরা তার ওপর আক্রমণ করতে পারি না। আমাদের বেসিক বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন হতে হবে, নয়তো সব সময় আমরা অন্যের ব্যবহৃত বস্তু হিসেবে থেকে যাব।

উল্লেখ্য, পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য গঠিত ১০ সদস্যের সমন্বয় কমিটিতে (ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনকে রাখা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। কমিটিতে এ দুজনকে রাখা নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তি তোলা হয়। এর জেরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর কমিটি বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সর্বশেষ খবর