বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আন্দোলনে সিলেট বিভাগে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৬ জন। এর মধ্যে চারজনের ময়নাতদন্ত হলেও বাকিদের দাফন হয় ময়নাতদন্ত ছাড়াই। কিন্তু মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতে নিহতদের লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত চায় পুলিশ। এজন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আদালত ছয়জনের লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে চারজনের লাশ তুলতে ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কোনো নিহতের পরিবার কবর থেকে লাশ উত্তোলনে আপত্তি জানাচ্ছেন বলে জানা গেছে। আন্দোলনে সিলেটের গোলাপগঞ্জে নিহত ছয়জনের মামলার তদন্তের জন্য লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করে পুলিশ। আদালত লাশগুলো কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের অনুমতি দেন। এরপর ছয়জনের মধ্যে চারজনের লাশ উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসন ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে নিহত গৌছ উদ্দিনের লাশ উত্তোলনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার জনি রায়, নাজমুল ইসলামের লাশ উত্তোলনে জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার জর্জ মিত্র চাকমা, হাসান আহমদ জয়ের লাশ উত্তোলনে জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও সানি আহমদের লাশ উত্তোলনে সহকারী কমিশনার মো. মাসুদ রানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই আদেশের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর গৌছ উদ্দিনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন না করার জন্য আদালতে আবেদন করেন তার ভাই ও মামলার বাদী মো. রেজাউল করিম। সিলেট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবিদা সুলতানার আদালতে এই আবেদন করা হলে শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটির নথি সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। কোনো আদেশ দেননি তিনি।
গোলাপগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আবদুন নাসের জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা ছয়জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করলে আদালত অনুমতি দিয়েছেন। আদালতের আদেশের পর পরই জেলা প্রশাসন থেকে চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই লাশগুলো যত দ্রুত সম্ভব কবর থেকে তোলা হবে। আমরা চেষ্টা করছি চারজন নয়, সম্ভব হলে একসঙ্গে ছয়জনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করতে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ার উজ জামান গণমাধ্যমকে জানান, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা আলোচনা করে সুবিধাজনক সময়ের মধ্যে লাশ উত্তোলন করবেন।