তিস্তাপাড়ে চীনের অর্থায়নে উপহারের হাসপাতাল নির্মাণ হবে। গত রবিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ঘোষণার পর মঙ্গলবার গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের মহিপুর মৌজার চর কলাগাছি এলাকা পরিদর্শন করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদীসহ কয়েকজন। এ সময় তারা চর কলাগাছিতে থাকা ১০০ একর খাস জমির মধ্যে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ২০ একর জায়গা পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের ধারণা এই হাসপাতাল ভারত নির্ভরতা কমাবে। তবে তিস্তাপাড়ের পাঁচ জেলা রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার মানুষ পৃথক পৃথক ভাবে চাচ্ছেন তাদের জেলায় এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হোক। একই দাবি জানিয়েছে দিনাজপর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের মানুষজন। নিজ নিজ জেলার বাসিন্দারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে দাবি তুলছেন তাদের জেলায় এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হোক। জানা গেছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে রংপুরে ১ হাজার শয্যার একটি আধুনিক বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করবে চীন। চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে এই হাসপাতালটি উপহার হিসেবে দিচ্ছে দেশটি। হাসপাতালটি তিস্তা প্রকল্প এলাকার কাছে নির্মিত হবে বলে উপস্থাপন করেন।
এদিকে এরপর চীনা কর্তৃপক্ষ সরেজমিন পরিদর্শন করে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট জায়গায় নির্ধারণ করবেন। তবে জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেছেন আমরা তিস্তাপাড়ে গিয়েছিলাম অনানুষ্ঠানিক। কোথায় হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে সেই বিষয়টি কিছুদিন পরেই খোলাসা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, ভারত যেদিন চিকিৎসা ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে সেদিনই চিকিৎসা ক্ষেত্র বাংলাদেশিদের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়। এই সম্ভবনাকে সফল করতে চীনা কর্তৃপক্ষ রংপুর বিভাগে বিশ্বমানের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, হাসপাতালের স্থান নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি না করে তিস্তা নিয়ে যারা আন্দোলন করছে এবং এই অঞ্চলের সুধীজনদের মতামতের ভিত্তিতে দ্রুত স্থান নির্ধারণ করা উচিত।
তিনি বলেন এমনিতে তিস্তাপাড়ের মানুষ স্বাস্থ্যগত বিষয়ে দুর্দশায় ভুগছে। এই অঞ্চলে চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল হলে পাল্টে যাবে অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার চিত্র। কিছু হলেই চিকিৎসার জন্য মানুষ ভারত যান এ প্রবণতাও কমবে।